যবিপ্রবিতে র‌্যাগিং, ৩ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার

যবি প্রতিনিধিঃ তদন্তে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. আল-আমিন, গণিত বিভাগের মো. সোহেল রানা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. বারিউল হক মুবিন। তাদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী।

শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের ৭৮তম বিশেষ সভায় ওই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সশরীরে সহ বোর্ডের সদস্যদের অনেকেই ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অ্যান্ড হেলথ সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩২০ নম্বর কক্ষ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আলম। জ্ঞান হারানোর পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করা হয় এবং এক থেকে দেড় ঘণ্টা হাসপাতালে না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে যবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ঘটনার দিন রাতে সাব্বিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় এবং পরদিন সকালে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই হলে ফিরিয়ে আনা হয়। শুধু তা-ই নয়, এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেয়া হয়।

সাব্বিরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হুমকি প্রদান এবং আলামত লুকানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ড থেকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া ওই কক্ষে উপস্থিত অন্য ১০-১৫ জন ছাত্র সাব্বিরকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের আরও ১০ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকবে না উল্লেখ করে অভিভাবকের সম্মতিসহ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মুচলেকা না দিলে ওই শিক্ষার্থীদেরও এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

এই শিক্ষার্থীরা হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাবুব হাসান রকি, রসায়ন বিভাগের শেখ জুবায়ের, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বি, কেমিকৌশল বিভাগের মো. পারভেজ মিয়া ও মো. এস বি সানাউল্লাহ সাকিব, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. মোহাইমিনুল হক, মো. খালিদুজ্জামান সৌরভ, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাফিউর রহমান অপূর্ব, কেমিকৌশল বিভাগের মো. সালমান মোল্ল্যা এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. সাইমুন নাইস। তাদের মধ্যে প্রথম তিনজন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এবং বাকি সাতজন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১