মারপিট করে বাবা-মাকে তাড়িয়ে দিল দুই ছেলে

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ জমি লিখে নেয়ার ৭ বছর পরে মারপিট করে বাবা-মাকে তাড়িয়ে দিয়েছে দুই ছেলে। বাবা মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় পেলেও মা অন্যের বাড়িতে রাত কাটায়। ঘটনাটি রংপুর নগরীর উত্তম বনিক পাড়ায়। প্রায় আড়াই মাস থেকে সেই বৃদ্ধ পিতা-মাতা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দেরিতে হলেও বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

রবিবার সকালে সরেজমিন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তম বনিক পাড়ার বৃদ্ধ নবির হোসেন (৮৫) দীর্ঘ ৫০ বছর স্থানীয় একটি মসজিদে মোয়াজ্জিন ছিলেন। তার ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিজমা নিয়ে সংসার ভালই চলছিল। আনুমানিক ৭ বছর আগে তিনি ৩ ছেলে ছাদেকুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম ও ছালেকিন ইসলামকে ভিটেবাড়িসহ দুই দফায় ৩৫ এবং ৪৫ শতক জমি লিখে দেন। ছেলে সাইদুল ইসলাম একটি কোম্পানিতে চাকরি করত। কিছুদিন আগে সাইদুল গ্রামে এসে একটি মুদি দোকান দেন। ছাদেকুল ও ছালেকিন শ্রমজীবী। এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ করে সংসার চালান। এত দিন স্ত্রী সুফিয়া খাতুনকে নিয়ে সংসার ভালই চলছিল নবির হোসেনের। কিন্তু সাইদুর ও ছাদেকুল বাবা-মাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তখন বাধ্য হয়ে মেয়ে নুর নাহারের বাড়িতে আশ্রয় নেন নবির হোসেন। তার স্ত্রী থাকেন আশপাশের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে। বিষয়টি এতদিন পরে জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠে।

বৃদ্ধ নবির হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার ৩ ছেলেকে সম্পত্তি লিখে দিয়েছিলাম বাকি জীবনটা শান্তিতে থাকার জন্য। ছোট ছেলে ছালেকিন অন্যত্র কাজ করে খায়। বাড়িতে খুব একটা থাকে না। কিন্তু সাইদুর ও ছাদেকুল আমাকে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কোনোদিন খাবার দিত আবার কোনো দিন একটি রুটি দিত। দুইমাস আগে আমাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমি মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও স্ত্রী সুফিয়া খাতুন অন্যের বাড়িতে থাকে। আমরা খুব কষ্টে রয়েছি। তিনি এ বিষয়ে সমাজপতিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নবির হোসেনের মেয়ে নুর নাহার বেগম বলেন, আব্বা সরল বিশ্বাসে ভাইদের জমি লিখে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ বয়সে বাবা-মাকে ওরা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। ওদের কাছ থেকে জমি ফেরত চাই।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে সাইদুল ইসলাম ও ছাদেকুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছে। তারা বাড়িতে নেই। সাইদুল ও ছাদেকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।

২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৃদ্ধ বাবা- মায়ের কষ্টের কথা শুনে আমি তাদের সাথে দেখা করেছি। সাইদুর ও তার অন্য ভাইদের বাবাকে জমি ফেরত দিতে বলেছি। কিন্তু স্থানীয়দের কাছে শুনলাম ওরা নাকি গা ঢাকা দিয়েছে। নবির হোসেনকে জমি ফিরে দিতে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১