সিরাজগঞ্জে বাঁধ ভেঙ্গে ডুবে গেলো ৫শ বিঘা জমির ধান

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি প্রবল চাপে বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাতে বাঁধ ভেঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের চর নাড়ুয়া গ্রামের মাঝে অবস্থিত বাহির চরের বিল এলাকার প্রায় ৫শ বিঘা জমির পাকা ও আধাপাকা ইরি-বোরো ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুড়াসাগর নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানি থেকে ফসল রক্ষায় স্থানীয় কৃষকেরা প্রায় ১ মাস আগে পুকুরপাড়া-শান্তিপুর সড়ক ব্রিজের মুখে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে বাহির বিল ও শান্তিপুর শাখা নদীতে পানি প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঝড়ে এই বাঁধ ভেঙ্গে শান্তিপুর শাখা নদী ও বাহির বিলে বন্যার পানি ঢুকে ফসল ডুবে যায়। সারা বছরের খাওয়ার ধান ডুবে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমিরুল ইসলাম, বাহাজ উদ্দিন, ঠান্ডু শেখ, মনছের আলী, রাশেদ আলী, আতর আলী জানান, উজানের ঢলের কারণে এমনিতেই এ নদীগুলোতে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর উপর ঝড়, ভারি বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ওই বাঁধটি রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে যাওয়ায় তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের চোখের সামনে পাকা ও আধাপাকা ধান বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ফসলহানী হয়েছে। ধানকাটা শ্রমিকের অভাবে তাদের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা।

তারা আরও জানান, ১ হাজার টাকা নগদ ও ২ বেলা খাওয়া দিয়েও তারা ধানকাটা শ্রমিক জোগাড় করতে পারেনি। অনেকে কোমর ও বুক পানিতে নেমে সামান্য ধান রক্ষা করতে পারলেও তা দিয়ে অর্ধেক বছরের খাদ্যের যোগানও হবে না বলে তারা জানান। ফলে গ্রাম জুড়ে কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এদিকে বাহির বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব গ্রামের প্রতিটি বাড়ির নারী ও শিশুরা ধানকাটা, নৌকায় ধান পরিবহণ ও মাড়াই কাজে পুরুষদের সহযোগিতা করছে। ফলে ধানকাটা ও মাড়াই নিয়ে এ সব গ্রামের নারী পুরুষ ও শিশুরা ব্যস্ত সময় পাড় করছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, উজানের ঢলে যমুনাসহ শাহজাদপুর উপজেলার সব গুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সাথে ঝড়-বৃষ্টির কারণে মাটির তৈরি কাচা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বাহির বিলে বন্যার পানি ঢুকে বিল এলাকার ৪/৫‘শ বিঘা জমির ধান ডুবেছে বলে খবর পেয়েছি। সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে জরুরী ভিত্তিতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১