কোরবানি পশুর চামড়ার বাজার এবারও সিন্ডিকেটের দখলে

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া এবারও সিন্ডিকেটের দখলে। সিন্ডিকেটের বেঁধে দেয়া দামের বাহিরে চামড়া কেনা-বেচা হচ্ছে না বগুড়া শহর ও শহরতলীতে। ফলে এবারও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের (ফড়িয়া) পুঁজি হারানোর আশংকা দেখা দিয়েছে। রোববার (১০ জুলাই) বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ১১টার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার জন্য দলবল নিয়ে বসে পড়েছেন। গ্রামাঞ্চল থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা (ফড়িয়া) চামড়া বিক্রি করতে আসলে তারা কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। দুপুর ১ টার দিকে শহরের থানা মোড়ে দেখা যায় নারুলী এলাকা থেকে রনি নামের এক যুবক অটোভ্যান যোগে ৮টি চামড়া বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। গড়ে তার ৮টি গরুর চামড়া অনেকটা জোর করে ৬০০ টাকা করে কিনে নেয়া হয়।
রনি বলেন, ৭০০ টাকা করে কেনা চামড়া ৬০০ টাকা বিক্রি করতে বাধ্য হলেন। যেখানেই যাই সিন্ডিকেটের লোকজন নির্দিষ্ট দাম বলে।

সাবগ্রাম থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা শাজাহান বলেন, এবারও চামড়া নিয়ে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে তাতে আমাদের (মৌসুমি ব্যবসায়ী) লাভ তো দুরের কথা পুঁজি নিয়ে টানাটানি হবে।

চকসূত্রাপুরের চামড়া ব্যবসায়ী হাসান বলেন, অনেক চিন্তা ভাবনা করে চামড়া কিনতে হচ্ছে। তিনি ৩ লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া কিনেছেন এক হাজার টাকায়। আর ২৮ হাজার টাকা মূল্যের খাসির চামড়া কিনেছেন মাত্র ২৫ টাকায়। ৫০০-৬০০ টাকার বেশি গরুর চামড়া কিনছেন না। ২-১ টা বেশি দামে কিনলেও ছোট চামড়ার সাথে গড় করছেন।

শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের হুমায়ুন কবির বলেন, তার ৭৭ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন ৭০০ টাকায়। তাও আবার ফড়িয়াকে কমদামে ২টি গরুর চামড়া কিনে দিতে হয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে চামড়ার দাম কমতে শুরু করেছে। ছাগলের চামড়া ১০-১৫ টাকা এবং ভেড়ার চামড়া ফ্রিতেও কেউ নিচ্ছে না।

বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একেএম আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা তিগ্রস্ত। চামড়ার ব্যবসা করে মানুষকে টাকা দিতে না পেরে অনেক ব্যবসায়ীকে জেল খাটতে হয়েছে। আমি নিজেই তিন কোটি টাকা পাব ট্যানারী মালিকদের কাছে। সংগঠনের সেক্রেটারি ট্যানারি মালিকদের কাছে পাবে ৯ কোটি টাকা। দীর্ঘ দিনেও বকেয়া টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। এ কারণে আমরা কোন ঝুঁকি নিচ্ছি না। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা যে যার দায়িত্বে চামড়া কিনবে। তারা বিক্রি করতে না পারলে নিজ দায়িত্বে লবন দিয়ে সংরণ করবে। চামড়া ক্রয় কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। তিনি আমাদেরকে বলেছেন প্রয়োজনে পৌরসভা থেকে চামড়া সংরণ করা হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ