গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন : আটক ৩

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে এক গৃহবধূ (১৯) কে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারপিট করে বটি দিয়ে মাথার চুল কেটে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই গৃহবধূর স্বামীকেও মারপিট করেছেন তারা। রবিবার রাতের দিকে উপজেলার কালীগ্রাম কয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহবধূর শ্বশুর ওই গ্রামের রাজ্জাক সিপাই (৬০), ভাসুর দেলোয়ার হোসেন (৩৫) ও ননদ রাজিয়া সুলতানা (৩৮) কে আটক করেছে থানা পুলিশ।
গৃহবধূর স্বামী রেজাউল করিম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আমার এক বন্ধুকে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী এবং ওই বন্ধু মিলে একসাথে বাড়িতে রাতের খাবার খাচ্ছিলাম। এ সময় আমার স্ত্রীর ঘরে পরপুরুষ ঢুকেছে এমন সন্দেহে বাইর থেকে আমার পরিবারের লোকজন বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর আমাদের খাবার খাওয়া শেষে আমি বাইরে ডাকাডাকি করলে আমার বাবা, বড় ভাই, বোন ও ভাবি শিকল খুলে দিয়ে সন্দেহ করে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। এ সময় আমার স্ত্রীর উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার শ্বশুরের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার বাড়িতে এলে তাদের সাথে আমার স্ত্রীকে তারা বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তিনি আরও জানান, রবিবার সকালে আমি আমার স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আদমদিঘী উপজেলার কালাইকুলি পালোয়ানপাড়া গ্রামে যাই। শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে এলে এদিন রাত ৮টার দিকে বাড়িতে আসি। এরপর বাড়িতে ঢুকতে লাগলে আমার বাবা, বড় ভাই, বড় বোনসহ আমার পরিবারের লোকজন আমাকেসহ আমার স্ত্রীকে মারপিট করতে থাকেন। এ সময় তারা বটি দিয়ে আমার স্ত্রীর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ জানান, বিয়ের পর থেকেই মাঝে মধ্যেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে মানসিক নির্যাতন করতো। এদিন তারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে মারপিট করাসহ আমার মাথার চুল কেটে নির্যাতন করেছেন। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে সোমবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহবধূর শ্বশুর, ভাসুর ও ননদকে আটক করেছে থানা পুলিশ এবং মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ