বরিশালে টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশালে টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীরসহ জেলার অধিকাংশ সড়ক। গত রবিবার ভোর ৫ টার দিকে প্রথম বৃস্টি শুরু হয়। এদিকে টানা বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আর খাল ও ড্রেন দিয়ে কীর্তনখোলা নদীর জোয়ারের পানি নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে ঢুকে পড়ছে।

মুশুলদারায় বৃস্টির কারনে হঠাৎ করে বিপাকে পরেন নগরবাসী। বিশেষ করে রিক্সা চালক, মোটরসাইকেল চালক থেকে শুরু করে সাধারন খেটে খাওয়া কর্মজীবীরা বেশি বিপদে পরেছেন। প্রচন্ড বৃস্টিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পরেন স্কুল, কলেজ, ও মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার নগরীর সদর রোর্ডে গিয়ে দেখাযায় শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ার পরে বৃস্টি কমার আশায় রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে অপেক্ষা করছে। তবে বৃস্টি না কমায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বিজে বিজে বাসায় যেতে লক্ষ করা গেছে।

এছাড়াও দেখা গেছে পেটের টানে বৃষ্টির মধ্যে ভিজে এক বৃদ্ধ তার মাথায় কলার সাজি নিয়ে বিক্রির উদ্দ্যেশে বের হয়েছে। এদিকে নগরী গুড়ে আরো দেখা যায়, নগরীর বেশ কিছু এলাকা ভিত্তিক সড়ক বৃস্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে সাময়িক সময়ের জন্য তৈরি হয়েছিল জন দূর্ভোগ।

অন্যদিকে লক্ষ করা গেছে বরিশালের কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে দিনভর হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে সমগ্র বরিশালে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, বিভাগের মধ্যে বরিশাল নগর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া ঝালকাঠীর বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে দিনের সর্বশেষ জোয়ারে ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আর পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

অপরদিকে বরগুনায় বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টমিটার ও পাথরঘাটায় ৮২ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া পিরোজপুরে বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টমিটার ও উমেদপুরে কচা নদীর পানি ২২ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পাউবোর গেজ রিডার শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রধান নদ-নদীতে পানির স্তরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

তবে, গত দুই দিনের মতো আজ ও এসব নদীর সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বরিশাল পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে গত তিনদিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের থেকে বাড়বে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ