এক মুকুটেই ২৮৬৮ হীরা

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ এক সময়কার বিশ্ব শাসক ব্রিটিশ রাজবংশ। বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলে গড়ে তোলে উপনিবেশ। এর রেশ ধরে যুগ যুগ শাসন-শোষণ করে গোটা বিশ্ব। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মাধ্যমে ইতি ঘটল এই শোষক সারির। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাদের শাসন থেকে মুক্তি পেতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। কিন্তু অনেকটা ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায়না’র মতো, রাজপরিবারে আজীবন রয়ে যাবে তাদের নির্মম ইতিহাসের কলঙ্ক।

এই রাজবংশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো ‘মুকুট’। সাম্রাজ্যের মুকুট বা ইম্পেরিয়াল মুকুট নামে পরিচিত মুকুটটি বয়ে বেরাবে এই বিভীষিকার চিহ্ন। দুই হাজার ৮৬৮ হীরা খচিত এই মুকুটটির রত্নগুলো রাজবংশে এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পুরস্কার কিংবা উপহার হিসাবে নয়। বরং তাদের অবিচারের প্রতীক হিসাবে। বছরের পর বছর অন্যায়ভাবে বিভিন্ন অঞ্চল দখলের পর বিভিন্ন সময় ব্রিটেনের রাজপরিবারে এসে জড়ো হয় এই রত্নগুলো। হীরার পাশাপাশি, ২৭৩ মুক্তা, ১৭ নীল পাথর, ১১ পান্না এবং পাঁচটি রুবি আছে শুধুমাত্র এই এক মুকুটেই! রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের রাজ্যাভিষেকের জন্য ১৯৩৭ সালে এটি তৈরি করা হয়।

রানি ভিক্টোরিয়ার আমল থেকে ব্যবহৃত মুকুটির পরিবর্তে বানানো হয় ‘রাজপরিবারের এই নতুন মুকুট’। ওজনে আগেরটির থেকে কম হলেও, মুকুটটির ওজন ১.০৬ কেজি। প্রতি বছর সংসদের উদ্বোধনীর সময় স্টেট ইম্পেরিয়াল মুকুটটি পরতেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। অন্যান্য সময় টাওয়ার অব লন্ডনের জুয়েল হাউজে দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা থাকে। প্রায় ৬০০ বছর মুকুটটিসহ বাকি ক্রাউন জুয়েলসগুলো এখানে রাখা হয়।

রানি শেষবারের মতো মুকুটটি পরেন ২০১৮ সালের সংসদ উদ্বোধনীতে। অমূল্য এই মুকুটটিতে স্থান পেয়েছে ভারতবর্ষ থেকে ‘চুরি করা’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরা কোহিনূরের একটি অংশ। কালিনান ২ নামেও পরিচিত। কালিনান ১ নামের অন্য অংশটি স্থান পেয়েছে রানির রাজদন্ডে। প্রথা অনুযায়ী, অভিষেকের সময় সেন্ট এডওয়ার্ড মুকুট পরবেন রাজা তৃতীয় চার্লস।

অনুষ্ঠান শেষে ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবে থেকে বের হওয়ার সময়ও ইম্পেরিয়াল স্টেট ক্রাউনটি দেখা যাবে তার মাথায়। মায়ের মতো সংসদের বার্ষিক উদ্বোধনীর সময়ও এই মুকুট পরিহিত থাকবেন রাজা তৃতীয় চার্লস।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ