বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ এবং নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কুশপত্তলিকা দাহ করেছে। গতকাল সোমবার রাতে ও আজ মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয় ও শহরের সাতমাথা এলাকায় বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

বিুব্ধ নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, এটি অযোগ্য কমিটি। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এই অভিযোগ এনে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে তারা বিােভ শুরু করেন। বিােভকালে তারা সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি জানান। এক পর্যায়ে তারা সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

বিলুপ্তির প্রায় ৯ মাস পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচারে‌্যর স্বারে সংগঠনের প্যাডে গত সোমবার বগুড়া জেলা কমিটি গঠন এবং অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন ওই কমিটিতে সজীব সাহা সভাপতি এবং আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। ঘোষিত ৩০ সদস্যের ওই কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ১৭ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৬ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে নতুন ওই কমিটির তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা বিুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে তারা সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেম্পল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনসমূহের কার্যালয়ের প্রবেশ পথের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর তারা তালাবদ্ধ দলীয় কার্যালয়ের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিােভ দেখাতে শুরু করে। এরপর তারা শহরের প্রধান সড়কে বিােভ মিছিল বের করে।

গত ২১ জানুয়ারি বগুড়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে গত ২ ফেব্রুয়ারি জীবন-বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়। ওই সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য অন্তত ৫৬ জন তাদের জীবন-বৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জমা দিয়েছিলেন।

দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ৭ নভেম্বর সোমবার ঘোষিত বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদেরকে মনোনীত করা হয়েছে তারা দু’জনেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। পান্তরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এবং মঞ্জুরুল আলম মোহনের অনুসারীদের হয়েছে সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এভাবে এক নেতার পছন্দের দু’জনকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন করায় অপর নেতাদের অনুসারীরা বিুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

বিােভকারীদের অভিযোগ, বগুড়ায় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দাবিদার অনেক ত্যাগী নেতা রয়েছেন। তাদেরকে বাদ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে এমন কমিটি করা হয়েছে যার সঙ্গে বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কোন সম্পর্ক নেই।

জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি পদ পেতে আগ্রহী মুকুল ইসলাম নামে একজন ওই রাতেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শ্রম দেওয়ার পরেও যখন আমার পরিশ্রমকে মূল্যায়ন করা হলো না তখন মনে হয়েছে এখানে না থাকাই ভাল।’

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০