বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশগুলো দেখে সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে গোটা দেশে সরকার ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে দলটি বলছে, পুরনো কায়দায় আবার গায়েবি মামলা দিচ্ছে সরকার। সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন রাজনীতি কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনে উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে যাতে জনসমাগম কম হয় সে কারণে তারা ইতোমধ্যে সারাদেশে মিথ্যা মামলা দেওয়া শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি গায়েবি মামলা দিচ্ছে। বিনা কারণে রাতের বেলায় অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। যেসব জায়গায় সমাবেশ হয়েছে সেখানেও করছে, এছাড়া এখনও যেখানে সমাবেশ বাকি রয়েছে সেই বিভাগের জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী সমস্যা সৃষ্টি করছে। হয়রানি করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, গ্রেফতার করছে।’ বিভাগীয় সমাবেশ সফল হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সাতটি বিভাগীয় সমাবেশ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের সমস্ত রকম বাধা-বিপত্তি গ্রেফতার হামলার মধ্য দিয়েও আমাদের সমাবেশগুলো সফল হয়েছে। আমাদের সমাবেশগুলো শুধু জনসমাবেশ হয়ে থাকেনি জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। দুই থেকে তিন দিন আগেই সমাবেশস্থলে এসে মাঠে এবং ফুটপাতে থেকে সমাবেশ সফল করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকার বিভিন্ন কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের পূর্বের ন্যায় দমন কৌশল অবলম্বন করছে। হামলা, মামলা, গ্রেফতার নিজেরাই বোমা পুতে রেখে বিরোধী মতের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, নিজেদের অফিস নিজেরাই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার পুরনো প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২২ আগস্ট থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৯৬টি মামলা দায়ের করেছে, চার হাজার ৪১২ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করেছে, ১০ হাজার ৬৬৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেছে, ৪৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার কৌশল হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরীর উত্তরে পাঁচটি মামলা এবং ৬২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবীউল্লাহ নবীসহ ২৪৫ জনের নামে ১০টি মামলা করা হয়েছে। ঢাকা জেলার সাভারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুসহ ৩২ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
