মিডিয়ার কারণে বিদেশিরা নিজেদের রাজা মনে করেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ মিডিয়ার কারণেই বিদেশিরা নিজেদের আমাদের দেশের রাজা মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, মিডিয়া পাত্তা না দিলে বিদেশিরা ঘরে বসে ‘হুক্কা’ খাবে।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) সিলেট সদর ও জকিগঞ্জ উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং কার্যক্রম জোরদারকরণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরে শেখ হাসিনার সাহস এবং ভিশনের কারণে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে অনেক অনেক ভালো অবস্থানে এসেছি। দারিদ্র্যতা একটি বড় অভিশাপ। আমরা সেটি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। বাংলাদেশ এখন দরিদ্র দেশ না। দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।

ড. মোমেন বলেন, যেহেতু আমরা প্রতিবেশী দেশ থেকে অনেক ভালো করছি, এজন্য অনেকে আকর্ষণবোধ করছেন। অনেকে অনেকভাবে ফায়দাও লুটতে চাচ্ছেন। বিশ্বের যেসব দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আছে সেসব দেশেই উন্নতি ঘটে। বাংলাদেশেও তা ঘটছে। যেসব দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই, সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। তবে আমাদের কিছু লোক চায় না দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করুক। কারণ, দেশ অশান্ত থাকলে তাদের ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল হয়।

তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে বিরোধীদলীয় অনেক নেতা আছেন যারা চান না আমাদের দেশ উন্নত হোক। তারা তাদের ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দুশ্চিন্তায় থাকেন। এজন্য তারা বিভিন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে লোকজনকে উসকে দেন। দেশ অশান্ত হলে তারাও কিন্তু শান্তিতে থাকবেন না। বিশ্বের যেসব দেশে যে পক্ষ অশান্তি সৃষ্টি করেছে তারাও কিন্তু শান্তিতে নেই। কিন্তু নিজের পা কেটেও তারা অন্যের ক্ষতি করতে চায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের জ্ঞান খুব সীমিত। সবচেয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন বাঙালিরা। অথচ বিদেশিরা যখন আমাদের কোনো পরামর্শ দেন তখন সেটি হাস্যকর। কারণ, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ, যে দেশের মানুষ মানবতা, গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের জন্য রক্ত দিয়েছেন। এ দেশের ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। দুনিয়ার আর কোথাও এমন নজির নেই। অথচ বিদেশিরা আসে আমাদের বুঝাতে। কিন্তু এ দেশের প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে ডেমোক্রেসি আছে।

ড. মোমেন বলেন, তাদের দেশে নির্বাচন হলে ২৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়, আর আমাদের দেশে ৭০-৮০ শতাংশ মানুষ ভোট দেন। অথচ তারা বড় বড় কথা বলেন। তারা নিজের দিকে তাকায় না। তারা তাদের নির্বাচনের সময় প্রার্থী পায় না। আর আমাদের মিডিয়াগুলো বিদেশিদের কথায় হইচই করে। তাদের নিউজ কাভার করা ব্ন্ধ করেন, তাদের পাত্তা দেবেন না। আমাদের মিডিয়া যদি ওদের কাভার করা বন্ধ করে তখন ঘরে বসে তারা খালি ‘হুক্কা’ খাবে। মিডিয়ার কারণেই বিদেশিরা নিজেদের এ দেশের রাজা মনে করে।

বাংলাদেশের মতো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অন্য কোথাও নেই মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা কারও স্বার্থে তথ্য সংগ্রহ করলেও মাথাব্যথার কিছু নেই। আমরা আমাদের দেশে লুকিয়ে কিছু করি না। আমরা ভেরি ফেয়ার, ওপেন। আমাদের দেশে ৪৫টি প্রাইভেট টেলিভিশন রয়েছে, প্রতিদিন সাড়ে ১২ হাজার সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। এছাড়া প্রতি মাসে ১ হাজার ৮০০ সাময়িকী বের হয়। এমন নজির বিশ্বের আর কোথাও আছে?

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিএমএর কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল চৌধুরী দুলাল, স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এস এম শাহরিয়ার, সীমান্তিকের প্রধান প্যাট্রন ড. আহমদ আল কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ