ঘোষিত ২৭ দফা রূপরেখা আন্দোলনেরই অংশ : আমীর খসরু

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ২৭ দফা রূপরেখা আন্দোলনের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে ২৭ দফার বিকল্প নেই। না হলে তো স্মার্ট বাংলাদেশের নামে স্মার্ট ভোট চুরি, শেয়ারবাজার লুট হবে।

রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমীর খসরু। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ঢাকা মহানগর উত্তর।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের যে অবস্থা, তাতে নিষেধাজ্ঞা আসবে সেটাই স্বাভাবিক। কারণ, এখানে ভালো কিছু হচ্ছে না। গুম, খুন করা হচ্ছে। দূতাবাসের কাজ হলো জনগণের পক্ষে কাজ করা। নিষেধাজ্ঞা ঠেকানোর কাজ তাদের না।’

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ যতো কালো আইন আছে, সবই বাতিল করা হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে একটা ট্র্যাকে আনতে হবে। সেজন্যই তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, যারা শিক্ষিত ও দক্ষ, অভিজ্ঞ তাদের সমন্বয়ে আপার হাউস গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে করে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে হতে হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘একটা কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য স্বাস্থ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই খাতে এক শতাংশ জিডিপির ব্যবহার নেই বললেই চলে। কারণ, এখানে সরকারের দুর্নীতি বেশি। ফলে দেশের মানুষের নিজের টাকা খরচ করেই চিকিত্সা নিতে হয়। যা আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ। এসব বিষয়ে সারা দেশে সেমিনার করা জরুরি। কারণ, একটি পরিবারকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হলে তার প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ শুরু হয়ে যায়। একটি পরিবারে যদি পাঁচ হাজার টাকা সেভ করা যায়, ওই পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাবে। সেই টাকা ছেলেমেয়েদের পড়ালেখায় খরচ করতে পারবে। দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারবে।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে দেশে যা হচ্ছে তা লুট। মেগা প্রজেক্ট করা হচ্ছে টাকা লুটে বিদেশে পাচারের জন্য। একটা গাড়ি আছে আরেকটা কীভাবে কেনা যায় সেটা করে। আজকে ৬৫ শতাংশ সংসদ সদস্য ব্যবসায়ী। তাদের সময় কোথায়?’

আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদেরকে ২৭ দফা দেশের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে ২৭ দফার প্রয়োজনীয়তা। কারণ, তারা জানতে চাইছে যে, শেখ হাসিনা চলে গেলে কী হবে? সেই জন্যই কিন্তু আমরা ২৭ দফা রূপরেখা দিয়েছি। এই দফাগুলো হলো আমাদের আন্দোলনের অংশ। আমাদের আন্দোলনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এর মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।’

খসরু বলেন, ‘এগুলো বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ সঠিক পথে চলবে না। রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এই ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে তো স্মার্ট বাংলাদেশের নামে স্মার্ট ভোট চুরি, শেয়ারবাজার লুট হবে। ১০ লাখ কোটি টাকার মতো বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের কথা আমরা বলছি না।’

আমীর খসরু বলেন, ‘আজকে বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নেই।’

ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান। ঢাকা উত্তর ড্যাবের মহাসচিব ডা. এএসএম মো. মাসুম বিল্লাহর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী প্রমুখ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ