ঢাকায় বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ : ক্যাব

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বিগত বছর (২০২২) ঢাকা শহরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ সময় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১০.০৩ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত অন্যান্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি ১২.৩২ শতাংশ।

আজ শনিবার কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) তাদের পণ্য ও সেবার মূল্যবিষয়ক প্রতিবেদন ২০২২-এ জানিয়েছে এ তথ্য। অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনটি।

সংস্থাটি বলছে, এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে চাল, আটা, ডাল, বেকারি পণ্য এবং চিনি। এ ছাড়া এ সময় মাছ, ডিম এবং দেশি মুরগি, ভোজ্যতেল, আমদানিকৃত ফল, চা/কফি, স্থানীয় এবং আমদানিকৃত দুধ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসামগ্রী এবং পরিবহন খরচ অতিমাত্রায় বেড়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে ২০২২ সালে বার্ষিক খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির তুলনায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি (যথাক্রমে ১০.৪১% এবং ৭.৭৬%) কম ছিল। যদিও উভয় শ্রেণির পণ্য ও সেবা মৌলিক প্রকৃতির ছিল। ভোগের ঝুড়িতে খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবার অংশ খাদ্য পণ্যের তুলনায় কম ছিল। খাদ্যবহির্ভূত জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি বেশির ভাগই ছিল স্থায়ী প্রকৃতির। এ কারণে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি খাদ্য মূল্যস্ফীতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল।

২০২২ সালের মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। যখন এটি জানুয়ারির তুলনায় ৭.২৯%-এ পৌঁছেছিল। এরপর জুনে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছে (১১.২৫%), যা সেই মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বাড়াতে সাহায্য করেছিল (১০.৪%)। জুলাই মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল সর্বোচ্চ (১৮.৬%), যা প্রধানত জ্বালানি মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন অনুসরণ করে ঘটেছিল। এটি সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে। এরপর আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫.৮৬-এ উন্নীত হয়েছে।

সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ (১৭.২৫%) হয়েছে। তবে এরপরের মাসগুলোতে ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে। যদিও এটি ডিসেম্বরে দুই অঙ্কের মধ্যে ছিল (১২.১%)।

অন্যদিকে আগস্টে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে (১৪.৭%)। কিন্তু পরে তা ফের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়তে থাকে (১৬.০৩%)।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দ্রুত অবমূল্যায়ন উৎপাদন খরচ, আমদানিকৃত পণ্যের দাম এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয় ঋণাত্মক না হয় খুব কম ছিল। খাদ্য এবং খাদ্য-বহির্ভূত উভয় মূল্যস্ফীতি মে মাসে হঠাৎ করে বেড়ে যায়। জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে প্রবেশ করে (১০.৩২%) এবং পরবর্তীতে জুলাই মাসে কমে যায়। যদিও সেই মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি খুব বেশি ছিল (১৮.৮৬%)। এটি আবার আগস্টে বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে (১৫.৩১%) ওঠে।

ক্যাব ঢাকা মেগাসিটি (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নিয়ে গঠিত) জুড়ে ১১টি বাজার থেকে মাসিক দামের তথ্য সংগ্রহ করে এ প্রতিবেদনের জন্য। দৈনিক দাম পর্যবেক্ষণে ১৪১টি খাদ্য সামগ্রী, ৪৯টি খাদ্য-বহির্ভূত পণ্য এবং ২৫টি পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ