শিবগঞ্জে জ্বালানির সংকট মেটাতে বাড়ছে গোবরের লাকড়ির ব্যবহার

শিবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  এক সময়ে গ্রাম অঞ্চলে গাছের পাতা কুড়িয়ে জ্বালানির প্রয়োজন মিটাতো গ্রামের বধূরা। ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই সথে গ্রামের জঙ্গল নিধন করে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এ কারণে বিলুপ্তির পথে বনাঞ্চল। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের রান্নার কাজে দেখা দেয় খড়ির সংকট। ধনী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধূরা নিজের গাছের খড়ি বা গ্যাস দিয়ে রান্না করে থাকেন। চরম বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের বধূরা।

বগুড়ার শিবগঞ্জে গ্রামগঞ্জে জ্বালানি কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের লাকড়ির চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনা মৌসুমে গোবর লাঠিতে পেঁচিয়ে শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় ওই লাঠি। গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাকড়ি বা খড়ি। সাশ্রয়ি জ্বালানি ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের লাকড়ি উপজেলার গ্রামগঞ্জের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে।

বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরি করছেন। তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘর থেকে ডালি ভর্তি করে বের করেন গোবর। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় কিছু পরিমাণ ধানের তুষ। এরপর ৩-৪ ফুট লম্বা বাঁশের চিকন লাঠি আকারে বা পাঠের শলা দিয়ে বধূরা তৈরি করছেন লাকড়ি। তৈরি কাঁচা লাকড়িগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দিচ্ছেন।

রোদের তামপাত্রা থাকলে ২-৩ দিন পরই শুকিয়ে যায় লাকড়িগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় ঘরে। উপজেলার ২০-২২ গৃহবধূ জানান, আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গোবরের তৈরি লাকড়ি দিয়ে সব ধরনের রান্নার কাজ করে আসছি। এটি তৈরি করতে কোন খরচ লাগে না। শুকনো মৌসুমে অতিরিক্ত পরিমাণ লাকড়ি তৈরি করে মজুদ রাখা হয় এবং বর্ষাকালে নিশ্চিন্তে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করি।

কিচক গ্রামের মওদুদ হাসান প্রিন্স চৌধুরীসহ কয়েকজন কৃষক জানান, যাদের গরু নেই তারা এলাকায় বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গোবর কুড়িয়ে লাকড়ি তৈরি করে জ্বালানির চাহিদা মিটাচ্ছেন। আবার অনেকেই লাকড়ি তৈরি করে তা বিক্রি করেও বেশ ভালোই উপার্জন করেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮