শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের সঙ্গে বিসিবির সম্পর্ক ছিন্ন

মমিনুর রশীদ শাইনঃ বিগত বিএনপি সরকারে আমলে উত্তরবঙ্গের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা পায়। পরের মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকও হয় স্টেডিয়ামটির। এ মাঠেই প্রথম শ্রীলংকাকে ১ ডে ক্রিকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

তবে অভিষেকের বছরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে চলে যায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। এর পর ভিশনাল কিছু খেলার আয়োজন করে বিসিবি, বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতা অভিযোগে এবার স্টেডিয়ামটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম থেকে ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যাহার করেছে বিসিবি। একইসঙ্গে স্টেডিয়াম থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গ্রাউন্ডসের সকল সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র। মাঠটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কে হন্তান্তর করেছে বিসিবি চিঠির মাধ্যমে, এর কারণ হিসেবে ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতাকে দুষছে বিসিবি।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেলে বিসিবি থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিবের কাছে পাঠানো পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার কারণে সেখানে নিয়মিত টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না পারায় স্টেডিয়াম সংরক্ষণের দায়িত্ব ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

শহীদ চান্দু ষ্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ষ্টেডিয়াম থেকে কাভার্ড ভ্যানে করে সকল সরঞ্জাম ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে । শহীদ চান্দু ষ্টেডিয়ামে কর্মরত ১৭জন কর্মকর্তরা শনিবার ঢাকায় রিপোর্ট করবেন।

বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান সিআপি বলছেন, সম্প্রতি জেলা ক্রীড়া সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয়- বগুড়া স্টেডিয়ামে স্থানীয় ক্রিকেট লিগ আয়োজনের, সেটি করতে দিতে চায় না বিসিবি একই সময়ে তারা টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে চায়। আমারা ক্রিকেট লীগ আয়োজনের চিঠি দিয়েছি তাদের। এ মাঠেই বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সকল কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনেক তরুন খেলোড়ার তৈরী হচ্ছে এবং জাতীয় দলে স্থান পাচ্ছে। কিন্ত তার পরেও বিসিবি অসহযোগিতার কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা।

মাসুদুর রহমান মিলন আরও বলেন, দীর্ঘদিন এ ভেন্যুতে খেলা দেয়া হয় না। এর প্রতিবাদ করায় ভেন্যুটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিরুদ্ধে আনা অসহযোগিতার অভিযোগটি ভিত্তিহীন।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের পর থেকে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হলেও জাতীয় লীগ, যুব ক্রিকেট লিগ, প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ এবং করপোরেট লিগের ম্যাচ হয়েছে এ মাঠে। এ ছাড়া হয়েছে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পও।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভঅপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, পদাধিকারবলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে আমি বগুড়া জেলার জেলা প্রশাসক এই দায় এড়াতে পারি না। তবে আমার স্বল্প সময়ে সব কিছু জানাও সম্ভব হয়ে উঠেনি। আবার বিসিবি ও আমাকে কখনো জানায় নি যে, জেলা ক্রীড়া সংস্থা হতে সহযোগিতা পাচ্ছে না। আপনাদের মতো যখন জানতে পারলাম তখন এই পত্রটির কার্যক্রর হতে চলছে। এখন আামার কিছু করার না থাকলেও বিসিবি’র সভাপতিকে বিষয়টি পুনঃ বিবেচনার নিবেদন করে রেখেছি এবং মাননীয় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করে রেখেছি। বগুড়া -৬ সংসদ সদস্যকেও অনুরোধ করেছি চেষ্টা করার জন্য।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ