নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে অনুমোদিত পণ্য আমদানির দাবি

শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে অনুমোদিত ১৯টি পণ্য আমদানির কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১টি পণ্য পাথর আমদানি করা হচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে ভুটান থেকে কয়লা এলেও হঠাৎ করে সেটির আমদানিও বন্ধ হয়ে যায়। সব ধরণের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকার পরও অনেকটা অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে আছে এই স্থলবন্দরটি। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অনুমোদিত সকল পণ্য আমদানির দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, এই বন্দর দিয়ে সকল বৈধ পণ্য আমদানি করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন লোকসান গুনছেন। এছাড়া বন্দরের কয়েক হাজার শ্রমিক কাজের সংকটে আছে। অপরদিকে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তাই ব্যবসায়ীরা পাশ্ববর্তী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গাবরাকুড়া স্থলবন্দর, কড়ইতলা স্থলবন্দর ও জামালপুরের কামালপুর স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে ঝুঁকছেন। জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে অনুমোদিত আমদানিযোগ্য পণ্যগুলো হলো- পাথর, কয়লা, রাসায়নিক সার, বলক্লে, কোয়ার্টজ, চায়না ক্লে, গবাদি পশু, কাঠ, টিম্বার, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মাছের পোনা, তাজা ফল, গাছ, বীজ, গম, মরিচ, রসুন ও আদা। একইসাথে এই বন্দরে ভারত থেকে শুটকী মাছ ও সুপারি আমদানী লাভজনক হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এখানে ‘শ্রমিক ইউনিয়ন’ এর অন্তর্ভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৮০০ জন। এছাড়া দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করে আরও প্রায় ১ হাজার শ্রমিক। লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন, আমদানি রপ্তানিকারক সমিতি ছাড়াও শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে এখানে। তারা এই বন্দরে কাজ করে তাদের সংসার পরিচালনা করছেন। একইসাথে সরকার পাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। কিন্তু ব্যসায়ীরা সব ধরনের বৈধপণ্য আমদানি করতে না পারায় অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে এই বন্দরের কার্যক্রম। এলাকাবাসী জানান, বর্তমান সংসদ উপনেতা ও শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের এমপি বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রচেষ্টায় বিগত ১৯৯৭ সালে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাকুগাঁওয়ে শুল্ক বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০৯ সালে তৎকালীন নৌ- পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালুর ঘোষণা দেন। পরে সাড়ে ১৩ একর জমির উপর ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় স্থলবন্দরের অবকাঠামো। দীর্ঘদিন কাজ শেষে ২০১৫ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব পরিচালনায় শুরু হয় কার্যক্রম। নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা বার বার তাগাদা দিয়েছি অন্য সব পণ্য আনার জন্য। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সহজে আমদানিযোগ্য পণ্যের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে বন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে ভারতের আসামের জাগির রোডে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শুঁটকির বাজার। দেশে চাহিদা থাকার পরও শুঁটকি আমদানি করা যাচ্ছে না এই বন্দর দিয়ে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো ফল হচ্ছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে আমরা পথে বসে যাবো। শ্রমিকরা না খেয়ে মরবে। তাই আমরা সরকারের নিকট অনুমোদিত পণ্য আমদানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাই।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ