ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ হচ্ছে না

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের মূল শ্রোতধারায় আনতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ হচ্ছে না। তারা বিশেষ দিবস ছাড়াও দলবেঁধে বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে হত্যা করছে এসব বন্যপ্রাণী। মাঝে মধ্যেই নানা বয়সীদের নিয়ে দল গঠন করে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, শেয়াল, বেজি, বাগডাসা, বনবিড়ালসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করতে দেখা যায়।

সম্প্রতি সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িবাঁধ এলাকায় চোখে পরে একদল সাঁওতাল গম, ভুট্টা ক্ষেতে বন্যপ্রাণী শিকার করছেন। এসময় তারা তীর-ধনুক, বল্লম, লাঠিসোটা দিয়ে বেশ কয়েকটি বেজি হত্যা করে। তাদের শিকার করা দেখতে উৎসুক মানুষেরা সেখানে ভিড় জমায়। লক্ষ্য করা যায়, সাঁওতালদের ৪/৫ জনের দলটি গমের ক্ষেতের ভেতরে লাঠি দিয়ে আঘাত করছে এবং মুখ দিয়ে শব্দ করছে।

এসময় বেজিরা প্রাণ ভয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। তখন সাঁওতালেরা তীর ছুঁড়ে তাদের শিকার করেন। শিকারীদের নাম, পরিচয় জানতে চাইলে তারা তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শুধু জানায় তারা সাঁওতাল, তাদের বাড়ি সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ফাড়াবাড়ি শিমুলতলীতে।

এব্যাপারে ঠাকুরগাঁও আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা এড. ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, এখন বন্যপ্রাণী ওরা মারে না ওরা। বর্তমানে শিকার নাই। সাঁওতালেরা যাতে বন্যপ্রাণী হত্যা না করে সে কারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ওদেরকে সংগঠন থেকে নিষেধ করা হয়েছে, যে এটি বেআইনি। ই-এসডিও প্রেমদীপ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সতর্ক করা হয়েছে, তাই এখন আর এ জাতীয় ঘটনা ঘটে না।

ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী যে কোন ধরনের বন্যপ্রাণী শিকার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধে কোন প্রকল্প চালু নেই। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলো ইচ্ছা করলে তাদের নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা যে কোন প্রোগ্রামে গেলে তাদের যথাসাধ্য বোঝানোর চেষ্টা করি।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বাংলাদেশের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কনক রায় বলেন, ইতোমধ্যে দেশের প্রায় সব জায়গাতেই সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যে এটি একটি অপরাধ। এর জন্য শাস্তির বিধানও রয়েছে। তবে বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো বৃদ্ধি করতে হবে। বন্যপ্রাণী রক্ষা করলে আমাদের কি উপকার রয়েছে তা তাদের জানাতে হবে।

নির্দিষ্ট এলাকার তথ্য থাকলে আমাদের জানালে আমরা ওই এলাকায় গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী হত্যা রোধ করতে পারবো।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ