সৈয়দপুরে মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষায় মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে মন্দিরের সম্পত্তি বেদখলকারী চক্রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) উপজেলা তিন নম্বর বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারের শ্রী শ্রী আর্য্যযোগ শ্রম বিষ্ণু মন্দির কমিটির উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে সেখানে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ভূবন মোহন।
এতে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি জুয়েল রায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি জুয়েল রায়, সহ-সভাপতি মলয় কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক বিপুল রায়পূজা উদ্যাপন কমিটির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি রাজকুমার পোদ্দার রাজু, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস মিন্টু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সৈয়দপুর পৌর শাখার সভাপতি রঞ্জন কুমার সরকার, শ্রী শ্রী আর্য্যযোগ শ্রম বিষ্ণু মন্দির কমিটির উপদেষ্টা শ্রী রবীন্দ্র নাথ রায়,সদস্য অজিত কুমার রায়, বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের সমাজ সেবক সামসুল হক সরকার প্রমুখ।
উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী শ্রী শ্রী আর্য্যযোগ বিষ্ণু মন্দিরটি ১৯৮৩ সালে স্থাপিত হয়েছে। সেই সময় থেকে মন্দিরটি এলাকার সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান প্রার্থনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিগত ১৯৯৪ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি জনৈক কান্ত বর্মণ তাঁর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি থেকে ইউনিয়নের বাড়াইশালপাড়া মৌজায় ১২ শতক জমি চৌমুহনী শ্রী শ্রী আর্য্যযোগ বিষ্ণু মন্দিরটি দান করেন। এরপর মন্দির কমিটি মন্দিরের উন্নয়নের লক্ষ্যে ওই জমির উপর কয়েকটি দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়ায় দেয়। মন্দির কমিটি ওই দোকান ঘরের ভাড়া নিয়মিত আদায় করে মন্দিরের উন্নয়ন সাধনসহ সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু মন্দিরের জায়গাটি বাঙ্গালীপুর চৌমুহনী বাজার সংলগ্ন হওয়ার কারণে কোন এক সময়ে মন্দিরের জায়গাটি সরকারের খাস খতিয়ানভূক্ত হয়। কিন্তু বিষ্ণু মন্দির কমিটির লোকজন ঘটনাটি অবগত ছিলেন না। পরবর্তীতে মন্দির কমিটি লোকজন বিষয়টি অবহিত হয়ে মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি খাস খতিয়ানভূক্তির তালিকা থেকে অবমুক্তির জন্য মামলা করেন। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে দোকান মালিকেরা মন্দির কমিটিকে ভাড়া প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন উপজেলার তিন নম্বর বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মো. শাহজাদা সরকার ওই ইন্ধন দাতা। তিনি মন্দিরের দেবোত্তর জমি নিজের দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়া হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের জীবন থাকতে তা কোন দিন হতে দেবে না।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনকে বিষ্ণু মন্দিরের সম্পত্তির বিষয়টি সুরাহা করার দাবি জানানো হয়ে। অন্যথায় মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষায় সৈয়দপুর তথা সারাদেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা।
ঘন্টাব্যাপী ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এলাকার নানা বয়সী সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা ব্যানার ও ফেস্টুন বহন করেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ