অচিরেই শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী : আমীর খসরু

চট্রগ্রাম প্রতিনিধিঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অনির্বাচিত, দখলদার ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে আজকের এই সমাবেশ। অর্থাৎ আপনারা বিএনপির শুধু নেতাকর্মী নন, যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকরা যে প্রস্তুতি নেয়, সেটি আপনারা শিখেছেন। আপনারা আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য সৈনিক হয়ে গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে সৈনিকরা ঝাপিয়ে পড়ে। এটাই প্রমাণ করে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী। শিগগিরই এ সরকারের পতন হবে এবং আমরা বাধ্য করব।

তি‌নি আজ ১৮মার্চ শ‌নিবার বিকা‌ল ৩টায় আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে, ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির আহবায়ক ডা.শহাদা‌ত হো‌সে‌নের সভাপতি‌ত্বে ও সদস‌্য স‌চিব আবুল হা‌শেম বক্ক‌রের প‌রিচালনায় কেন্দ্রঘো‌ষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির বি‌ক্ষোভ সমা‌বে‌শে প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে উপ‌রোক্ত বক্তব‌্য রা‌খেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন,আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চোর, ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার চোরসহ যত উপাধি আছে বলে শেষ করা যাবে না। এতো চোর, এতো চুরি বিশ্বের কোনো দেশে হয় না।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত সাধারণ মানুষের দুই বেলা খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। স্কুলের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে কষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত বাংলাদেশের বাকি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, কেন দ্রব্যমূল্য বাড়ছে? বিদ্যুৎ খাতে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। যাদেরকে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগের। এক্ষেত্রে কোনো টেন্ডার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী অফিসে যেতে বলেছেন। একটা একটা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরা বিদ্যুতের লাইসেন্স নিয়ে বিদুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু উৎপাদন না করেও কুইক চার্জের নামে ৯০ হাজার কোটি টাকা তারা সরকারের কোষাগার থেকে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো মামলা করতে না পারে, সেটার জন্য আইন করেছে। অর্থাৎ দুর্নীতি করার জন্য আইন করেছে তারা।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন,
আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এই সিন্ডিকেট ছাড়া কেউ ডলার পাচ্ছে না। এমনিতে তো ডলার সব খেয়ে ফেলছে। ১০ লাখ কোটি টাকার ডলার তারা বিদেশে পাচার করেছে। এখন ডলারের রিজার্ভ শূন্যের দিকে যাচ্ছে। যা আছে তা পাচ্ছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট বেশি দামে পণ্য মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন,বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচিতে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের আর পালাবার পথ নেই। এই সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে’। আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। এরা জনগণের ভোট চুরি করেছে, চাল চুরি করেছে, তেল চুরি করেছে, জনগণের টাকা চুরি করেছে। বাংলাদেশ থেকে এখন ১২ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে হয়ে গেছে। এই সরকারের অধীনে কোন ধর্মের বর্ণের মানুষের নিরাপত্তা নেই। সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্ক বানিয়ে কাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়। ৬ বছর আগে নাসিরনগর উপজেলায় হিন্দুদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। গতকাল আদালত ওই উপজেলার আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদকসহ ১৩ জনকে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।

ডা. শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দাম্ভিকতায় প্রমাণিত হচ্ছে তাদের মধ্যে ভয়ে আছে। কারন তারা জানে তাদের সময় শেষ হয়ে গেছে। ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। সামনে রমজান মাস জনগণকে দুর্ভোগে ফেলতে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। সুরক্ষা পরিষদের উপর ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালিয়েছে। আমরা বলতে চাই চট্টগ্রামের মানুষ অযাচিত হোল্ডিং ট্যাক্স দিবে না। যদি হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়, বিএনপি আন্দোলনে নামবে। জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে।

প্রধান বক্তার বক্ত‌ব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠ‌নিক সম্পাদক মাহবু‌বের রহমান শামীম ব‌লেছেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও গ্যাস–বিদ্যুৎসহ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। নিত্যপণ্যের দাম কমাতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের ব‌্যর্থ হ‌য়ে‌ছে। এই ফ‌্যা‌সিষ্ট আওয়ামী সরকার দুর্নী‌তি ও লুটপা‌টে ব‌্যস্ত। তারা জনগ‌নের ভো‌টে নির্বা‌চিত নয় ব‌লে জনগ‌নের দুঃখ দুর্দশা লাঘ‌বে কোন প্রকার প্রচেষ্টা নেই। তা‌দের একমাত্র লক্ষ‌্য দমন নি‌পিড়‌নের মাধ‌্যমে অ‌বৈধ ক্ষমতা‌কে চিরস্থায়ী করা। দে‌শের জনগন এই অ‌বৈধ সরকা‌রের বিরু‌দ্ধে জে‌গে উ‌ঠে‌ছে। জনগন তা‌দের আর ক্ষমতায় দেখ‌তে চায় না। সরকা‌রের অ‌নিয়ম দুর্নী‌তির বিরু‌দ্ধে দে‌শের সু‌বিধা ব‌ঞ্চিত মানু‌ষের অ‌ধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএন‌পি অব‌্যাহত কর্মসূ‌চি পালন কর‌ছে। বিএন‌পি জনগন‌কে সা‌থে নি‌য়ে গণআ‌ন্দোল‌নের মাধ‌্যমে এই ফ‌্যা‌সিষ্ট সরকা‌রের পতন ঘ‌টি‌য়ে ভোটা‌ধিকার, আই‌নের শাসন সর্বোপ‌রি জনগ‌নের সরকার প্রতিষ্টা কর‌বে, ইনশাআল্লাহ।

কেন্দ্রীয় বিএন‌পির শ্রম‌বিষয়ক সম্পাদক এ এম না‌জিম উ‌দ্দিন ব‌লে‌ছেন, এই অবৈধ সংসদ ভেঙে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন দি‌তে হ‌বে। জনগ‌নের প্রয়োজ‌নে সং‌বিধান প‌রিবর্তন কর‌তে হ‌বে। অন‌্যথায় জনগন‌কে সা‌থে নি‌য়ে দেশব্যাপী দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তু‌লে সং‌বিধান প‌রিবর্ত‌নে বাধ‌্য করা হ‌বে। আওয়ামী লীগ জা‌নে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। দে‌শের জনগণ নৌকাকে চিরতরে ডুবিয়ে দেবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির সদস‌্য স‌চিব আবুল হা‌শেম বক্কর ব‌লে‌ছেন, সু‌প্রিম কো‌র্ট বারের নির্বাচনকে কেন্দ্র ক‌রে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আদালত প্রাঙ্গনে গত দুই‌দিন তান্ডব চা‌লি‌য়েছে। ‌দে‌শের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা ন‌জির‌বিহীন। সুপ্রিম কোর্ট আর সুপ্রিম কোর্ট নেই। এটা এখন আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধে গড়ে তুলতে হবে।

বি‌শিষ অ‌তিথর বক্ত‌ব্যে বিএন‌পির কেন্দ্রীয় সহ- সাংগঠ‌নিক সম্পাদক হারুন অ‌র র‌শিদ ব‌লে‌ছেন,দেশের মানুষ আজকে ভোট দিতে পারে না। এ সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের সম্মান নষ্ট করেছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপহাসের পাত্র হিসেবে পরিণত করেছে। বর্তমান অবৈধ সরকার এমন কোনো নিত্যপণ্য নেই, যার দাম বাড়ানো হয়নি। আওয়ামী সরকা‌র থে‌কে মু‌ক্তি পে‌তে দুর্বার আ‌ন্দোলন গ‌ড়ে তু‌লে, পদত‌্যা‌গে বাধ‌্য কর‌তে হ‌বে।

আবু সুফিয়ান বলেন, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির নতুন স্টাইল ইভিএম মেশিন কেন্দ থেকে বাইরে নিয়ে গেলো যুবলীগ নেতা, দায়িত্বরত পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখলো। এটাই প্রকৃত আওয়ামী লীগের চরিত্র এদের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির আহবায়ক ডা.শহাদা‌ত হো‌সে‌নের সভাপতি‌ত্বে ও সদস‌্য স‌চিব আবুল হা‌শেম বক্ক‌রের প‌রিচালনায় কেন্দ্রঘো‌ষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির বি‌ক্ষোভ সমা‌বে‌শে প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে রা‌খেন বিএন‌পির জাতীয় স্থায়ী ক‌মি‌টির সদস‌্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী,প্রধান বক্তার বক্তব‌্য রা‌খেন বিএন‌পির কেন্দ্রীয় সংগঠ‌নিক সম্পাদক মাহবু‌বের রহমান শামীম, বি‌শেষ অ‌তি‌থির বক্তব‌্য রা‌খেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সহসংগঠ‌নিক সম্পাদক হারুন অর র‌শিদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সমা‌বে‌শে বক্তব‌্য রা‌খেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, হাজী মো. আলী, মাহবুব আলম, নিয়াজ মো. খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মো. কামরুল ইসলাম,কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারন সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু,ম‌হিলা দল নেত্রী ফা‌তেমা বাদশা, জেলী চৌধুরী, যুবদল কেন্দ্রীয় ক‌মি‌টি সদস‌্য সাইফুর রহমান শপথ, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী বাবুল হক, মো. আজম, হাজী মো. সালাউদ্দীন, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, মো. সেকান্দর, হাজী হানিফ সওদাগর, আবদুল্লাহ আল হারুন,, ডা. নুরুল আবছার, এম আই চৌধুরী মামুন, থানা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, জাহিদ হাসান, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মাঈনুউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, নুর হোসাইন, নগর বিএনপি’র সাবেক উপদেষ্টা নবাব খান, শ্রমিকদলের তাহের আহম্মেদ, নজরুল সরকার, কৃষকদলের আহবায়ক মো. আলমগীর, সদস‌্য স‌চিব কামাল পাশা নিজামী, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, ছাত্রদ‌লের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস‌্য স‌চিব শ‌রিফুল ইসলাম তুহীন, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, সদস‌্য স‌চিব এড. আবদুল আ‌জিজ প্রমূখ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ