রাশিয়ায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি উৎপাদন চুক্তি সই

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধিঃ  পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) উৎপাদন প্রস্তুতি সনদসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুক্রবার (৫ মে) দুপুর ২টার দিকে রাশিয়ার নভোসিভিরসক শহরে রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান টিভিএল (TVEL) এর সদরদপ্তরে এ চুক্তি সই হয়।

চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর ও রাশিয়ার পক্ষে এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এভি দেইরি।

জানা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিভিইএল। প্রতিষ্ঠানটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইফটাইম জ্বালানি সরবরাহ করবে। প্রকল্পের জন্য বিশেষায়িত জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) রাশিয়াতে উৎপাদন করা হবে। স্পর্শকাতর এ জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য আইএইএর অনুমোদন ও লাইসেন্সের পাশাপাশি রাশিয়ার রপ্তানি নীতির আলোকে তাদের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

পারমাণবিক জ্বালানি রাশিয়া থেকে দেশে আনা ও প্রকল্পে নেওয়ার সময় কঠোর নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বিস্তারিত নির্দেশনাও রয়েছে। তা অনুসরণ করে জ্বালানি বন্দরে এসে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্পে নেওয়া হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের দেওয়া হবে। সে সব বিষয়েও প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) আমদানি ও সংরক্ষণ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে। এ মর্যাদা পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিশ্বে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করবে। সেইসঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু করতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও আর থাকবে না।

প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদনের অগ্রযাত্রায় আরও এক নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হলো। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির অংশ হিসেবেই রাশিয়া ৩৬ মাস জ্বালানি নিরাপত্তা দেবে। অর্থাৎ উৎপাদনের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী ৩ বছর জ্বালানির জন্য আলাদা করে অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। এছাড়া এ চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও আইএইএ নীতিমালা অনুযায়ী জ্বালানি উৎপাদনে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা রইল না।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান, প্রকল্পের উপ-পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান, প্রকল্পের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলক চক্রবর্তী, নিউক্লিয়ার কাউন্সিলর শুভাশিস সর্দার।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ