১৯টি থেকে ২০০টি, ছাগল পালনে জাকারিয়ার বাজিমাত!

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ করোনাকালে দুই বন্ধু মিলে করেছিলেন মুরগির ব্যবসা। সেখানে লোকসান হলে মুরগির খামার বাদ দিয়ে ১৯টি ছাগল কিনে পালন শুরু করেন। বলছি, সিরাজগঞ্জের ছাগল খামারি মোঃ জাকারিয়ার কথা। তিনি ছাগল পালন করে সফল হয়েছেন। বর্তমানে তার খামারে ২০০টি ছাগল রয়েছে। তার সফলতা দেখে অনেকেই খামার করায় আগ্রহী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাকারিয়া সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি রাজশাহীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের কালিয়াপাড়া এলাকায় ৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘ওয়াফা এগ্রো ফার্ম’ নামে একটি মুরগির ফার্ম গড়ে তুলেছিলেন। ডিম ও মুরগির দাম বাড়বে সেই আশায় গড়ে তোলা খামারটি ৫ লাখ টাকা লোকসানের পর বন্ধ করে দেন। তারপর মাত্র ১৯টি ছাগল কিনে পালন শুরু করেন। প্রজনন বৃদ্ধির জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের পাঠাও রয়েছে তার খামারে। বর্তমানে তার খামারে ২০০টি ছাগল রয়েছে। তিনি নিজের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করেছেন।

খামারি জাকারিয়া বলেন, আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে জায়গা লিজ নিয়ে মুরগির ফর্ম করি। সেখানে প্রায় ৩ হাজার লেয়ার মুরগির পালন করতাম। করোনা মহামারিতে ডিম বিক্রি করতে পারিনি। আর মুরগি গামবোরোর কারণে মারা যায়। তখন প্রায় ৫ লাখ টাকার লোকসান হয়। তারপর সেই জমিতেই ২০২১ সালে ১৯টি ছাগল কিনে পালন শুরু করি। বর্তমানে আমার খামারে ২০০টি ছাগল রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মাটি থেকে দুই ফুট উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে ছাগলের বাসস্থান করেছি। অসুস্থ ছাগলের জন্য সেখানে কোয়ারেন্টাইন সেলও রেখেছি। সুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত সেখানে রেখে তারপর মূল বাসস্থানে নেওয়া হয়। এছাড়াও ছাগলের খাবারের জন্য বিঘাখানেক জমিতে ঘাস চাষ করেছি। ছাগলগুলোকে প্রকৃতিক খাবার দিয়ে থাকি। খৈল ভাঙ্গা, আটা, গমের ভুষি, কাঁচা নেপিয়ার জাতের ঘাস। এছাড়াও সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ভ্যাকসিন দিয়ে থাকি।

জাকারিয়া আরো বলেন, খামারে প্রতি ১০ ছাগলের জন্য একটি করে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের পাঠা রয়েছে। ছাগল প্রতি বছরই ২-৪ করে বাচ্চা দিয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। মাত্র দেড় বছরেই বিনিয়োগের টাকা উঠে আসে। গত কোরবানির ঈদে হাটে তোলায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সঠিক পরিচর্যায় এর পালন অত্যন্ত লাভজনক। এই খামারটি আরো বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। খামারে ৪ জন কর্মী কাজ করে থাকেন। তাদের মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা।

রাজশাহীর ছাগল উন্নয়ন খামারের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যারা খামার করার উদ্যোগ গ্রহন করতে চান তাদের সবাইকে ছাগল পালনের উপর বেসিক ট্রেনিং নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। বাড়িতে গতানুগতির পদ্ধতিতে পালন করা যায়। তবে খামার করে পালন করতে হলে পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। ছাগলকে ৩০ ভাগ দানাদার খাবার ও ৭০ ভাগ ঘাস খাওয়ালে দ্রুত বেড়ে উঠবে। আর খামারিরা লাভবান হতে পারবেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ