বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বগুড়া শহরের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাগুলোর অন্যতম বীরশ্রেষ্ঠ স্মৃতিস্তম্ভ। তাই শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় স্থাপিত এ এলাকাকে বীরশ্রেষ্ঠ স্কোয়ার নাম দেয়া হয়েছে। একনজরে যেকোনো মানুষের মন কেড়ে নেয় এ স্থাপনা। বীরশ্রেষ্ঠ স্কোয়ার শহরের সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছে। সেই সাথে যানজট নিরসনে রাখছে অনন্য ভূমিকা।
বগুড়া শহরের গোড়াপত্তন সেই তের শ’ শতাব্দিতে। বাংলার স্বাধীন সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহ (বগরা খান) ১২৮২ থেকে ১২৯২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় রাজত্ব করেন। তার বাবা ছিলেন দিল্লির সম্রাট গিয়াস উদ্দিন বলবান শাহ। তখন বগরা খানের নাম অনুসারে বগুড়ার নামকরণ করা হয়। এরপর ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়াকে জেলা ঘোষণা করা হয়। আজ থেকে ১৯৭ বছর আগে বগুড়াকে জেলা ঘোষণার পর থেকেই বগুড়া শহরের গুরুত্ব বাড়তে থাকে। উত্তরাঞ্চলের গেটওয়ে হওয়ায় বগুড়াকে উত্তরাঞ্চলের রাজধানী হিসেবেও আখ্যা দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘকাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে যানজট নিরসনে ট্রাফিক আইল্যান্ড ছাড়া কোনো দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ছিল না।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের (২০০১-২০০৬) আমলে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বগুড়া সড়ক বিভাগ শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় ২০০৫ সালে নির্মাণ করে বীরশ্রেষ্ঠ স্মৃতিস্তম্ভ। এই স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীর সেনানী হলেন ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ, ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মাদ শেখ, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, সিপাহি মোস্তফা কামাল, সিপাহি হামিদুর রহমান, ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার রুহুল আমীন ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান। শহীদদের অবদানের কথা স্মরণ করে তাদের নামে সাতটি আলাদা স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি স্তম্ভের মাথায় প্রত্যেক বীরশ্রেষ্ঠের ছবিসহ নাম ফলক রাখা রয়েছে। এ ছাড়া স্তম্ভের মাথায় অত্যাধুনিক লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সাথে নিচে রাস্তা থেকে উঁচু স্থাপনা তৈরি করে সেখানে ফুলের বাগান করা হয়েছে। এর ফলে শহরের জিরো পয়েন্টের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ততম এ শহরের যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।