পশ্চিমবঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক দুর্নীতি মামলায় এই রায় দেন কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের তালিকা থেকে ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়ে রায় দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন তাদের নিয়োগ নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে বিতর্ক চলছে। মোট ৪২ হাজার ৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয়ছিল। তাদের মধ্যে ৩৬ হাজার শিক্ষকের কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছিল না।তাদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, অর্থের বিনিময়ে বেআইনিভাবে প্রাথমিকে শিক্ষকপদে চাকরি দেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীরা। এছাড়াও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের দিকেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) তদন্ত শুরু করে। তদন্তের দায়িত্ব সিবিআই-এর কাছে আসার পর তারা এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্ৰেফতার করে ও উদ্ধার করা হয় কোটি কোটি রুপি।

ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট অপ্রশিক্ষিত প্রাপ্ত ও অবৈধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি পাওয়া ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছেন।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, নতুন এই রায়ের তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। এছাড়াও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তার নির্দেশে জানিয়েছেন, যে প্রাথীরা চাকরি পাওয়ার পর ইতোমধ্যেই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন তাদের চাকরি থাকবে।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, এখনই চাকরি যাবে না। প্রশিক্ষণ যাদের নেই তারা আগামী চার মাস চাকরি করবেন। তবে তারা পার্শ্ব শিক্ষকদের স্তরে বেতন পাবেন। নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনিয়মের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ২০১৬ সালের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

তবে হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, আদালত যে নির্দেশই দিক না কেন, চাকরি প্রার্থীদের চাকরি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও চাকরি প্রার্থীদের পাশেই আছে প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদ।

গৌতম পাল বলেন,বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের সম্মান আছে। আমরা আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। আদালতেও আবেদন করতে যাচ্ছি। নিয়ম মেনে প্রত্যেকের প্রশিক্ষণ করানো হয়েছে। বর্তমানে প্রশিক্ষনবিহীন কেউ নেই।

তিনি দাবি করেন, আমরা খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত জানাবো। যারা চাকরি করছেন, তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি মামলা চলাকালীন হলফনামা আকারে আদালতকেও জানানো হয়েছিল।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ