ডায়াবেটিস স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আসছে দেশের ১০ লাখ মানুষ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ দেশের ৪৩ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী জানেন না তাঁরা এ রোগটিতে আক্রান্ত। ডায়াবেটিসের কারণে হৃদযন্ত্র বা কিডনির পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর অনেকের এ রোগ শনাক্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের ১০টি শহরের ১০ লাখ মানুষকে স্ক্রিনিং ও ডায়াবেটিস বিষয়ে সচেতন করতে শুরু হচ্ছে ‘কান্ট্রি চেঞ্জিং ডায়াবেটিস’ প্রকল্প।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ ও জাইকার যৌথ প্রয়াসে আগামী দুই বছরে অন্তত ১০ লাখ ডায়াবেটিস রোগী স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আসবেন। এ প্রকল্পের আওতায় ডায়াবেটিস শনাক্তে মানুষের দোরগোড়ায় যাবে গাড়ি ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নানা পরামর্শ প্রদান ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে তৈরি করা হয়েছে অ্যাপ।

মঙ্গলবার বারডেম হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিশ্বজিৎ ভৌমিক। তিনি বলেন, কান্ট্রি চেঞ্জিং ডায়াবেটিস প্রকল্পের আওতায় আগামী আগস্ট থেকে আটটি বিভাগীয় শহর, গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজার শহরে ডায়াবেটিস নির্ণয় এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে একটি করে গাড়ি যাবে। মোবাইল ডায়াবেটিস সেন্টার নামে এই গাড়িতে ডায়াবেটিস ছাড়াও চোখ, দাঁত, আলট্রাসনোগ্রাম, লিপিড প্রোফাইলসহ বেশ কিছু পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হবে। যাদের ডায়াবেটিস শনক্ত হবে, তাদের মেডিকেল কলেজ, ডায়াবেটিক সমিতি বা কাছের হাসপাতালের সঙ্গে করিয়ে দেওয়া হবে যোগাযোগ।

বিশ্বজিৎ ভৌমিক আরও বলেন, ডায়াবেটিসের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি ছয় গুণ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দু-তিন গুণ, অন্ধত্বের ঝুঁকি ২৫ গুণ, কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ ও পা কেটে ফেলার ঝুঁকি ২০ গুণ বেড়ে যায়। শুরুতে ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে ও নিয়ন্ত্রণে থাকলে অকাল মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। তবে মানুষ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে চায় না। এ প্রকল্পের আওতায় আমরা মানুষের কাছে যাব। ১০টি শহরে ১০ মাস স্ক্রিনিং ও আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার এ প্রকল্প সরকার নিয়ে নিতে পারে। যেখানে রিসোর্স নেই, ফ্যাসিলিটি নেই, সেখানে মানুষের দোরগোড়ায় যাবে এ গাড়ি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইতোমধ্যে ডায়াবেটিস রিস্ক ক্যালকুলেটর (ডিআরসি) নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটি রক্ত পরীক্ষা ছাড়াই বলে দেবে কোনো ব্যক্তি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছেন কিনা। নিবন্ধনকারীর ওজন কত হওয়া উচিত এবং সেই অনুপাতে তাকে দিনে কত ক্যালরি খাবার খেতে হবে তাও বলা আছে অ্যাপে। এতে বিনামূল্যে নিবন্ধনকারীর উপযোগী ডায়েট চার্ট দেওয়া আছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কত মানুষ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছে, কতজন আক্রান্ত, কতজন চিকিৎসা পাচ্ছেন, কত সংখ্যকের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, কত সংখ্যকের অন্য জটিলতা দেখা দিয়েছে, সে সম্পর্কে তথ্য থাকবে। ফলে অ্যাপটি ডায়াবেটিস নজরদারির পদ্ধতি তৈরিতেও সহায়তা করবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ