মাটি বাঁচানোর বার্তা নিয়ে ভারতের ২ যুবক বগুড়ায়

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ চাষযোগ্য মাটি বাঁচানোর ক্যাম্পেইনে বাইসাইকেলের চালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন দুই ভারতীয় যুবক। ১৫ দিনের সফরে তারা বাংলাদেশের নয়টি জেলার প্রান্তিক মানুষের সাথে কথা বলছেন। তাদের সচেতন করছেন। আজ দুপুরে এই দুই যবক বগুড়ায় বগুড়ায় পৌঁছেছেন।

দুই যুবক হলে ভারতের কলকাতার নদীয়ার কৃষ্ণপুর এলাকার পলাশ পাইক (৪০) ও কলতাকার বেলেঘাটার গৌতম কর্মকর্তার। পলাশ পেশায় শিক্ষক। আর গৌতম ফ্রিলান্সিং ফটোগ্রাফার। তারা দুজন এখন পরিবেশ আন্দোলন কর্মীও।

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দন দিয়ে তারা গত ১৬ মে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এরপর তাদের চাষযোগ্য মাটি বাঁচানোর সচেতনতার ক্যাম্পেইন শুরু হয়। যশোর থেকে তারা যান খুলনায়, এরপর গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ হয়ে বগুড়ায় আসেন। বগুড়া পৌঁছার পর তাদের সঙ্গে কথা হয়।

গৌতম জানান, পৃথিবীতে ক্রমাগতভাবে চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। আমেরিকার মতো জায়গায় অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে প্রাণ প্রকৃতির সাথে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে কৃষি জমিও। এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীতে চাষযোগৗ জমি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

পলাশ ও গৌতম বিভিন্ন গবেষণার বরাতে দাবি করেন, ২০৪৫ সালে পৃথিবীতে ৯২০ কোটি জনগণ হবে। এর মধ্যে খাদ্য উৎপাদনে বিভিন্ন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। চাষযোগ্য কমতে থাকলে পৃথিবী খাদ্য সংকটে পড়বে। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতে ইষা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন মাটি বাঁচানোর আন্দোলন করছে। মূলত তাদের আন্দোলনের অনুপ্রাণিত হয়েই তারা বাংলাদেশে এই সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে এসেছেন।

বাংলাদেশে পৌঁছার পর তারা ঢাকায় ফ্যামিলি সাইক্লিং নামক একটি গ্রুপের সাথে কথা বলেছেন। বাংলাদেশি এই গ্রুপও দেশেরে চাষযোগ্য মাটি রক্ষার আন্দোলনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশি গ্রুপের মাধ্যমে তারা ব্যাপক পরিসরে মাটি রক্ষার মেসেজ ছড়িয়ে দিতে চান।

ক্যাম্পেইনে আসা যুবক পলাশ বলেন, তারা প্রতিদিন একটি জেলার অন্তত ১৫ জন কৃষক কিংবা প্রান্তীক মানুষের সাথে কথা বলছেন। তারা বুঝানোর চেষ্টা করছেন, কীটনাশক দিলে মাটির সর্বনাশ হয়। এভাবে জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করলে পৃতিবীতে চাষযোগৗ মাটি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। তারা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৌব সার ব্যবহার, গাছ লাগানোর পরমার্শ দিচ্ছেন।

জনজমায়েত, চা স্টল কিংবা দোকান এলাকায় গিয়ে পলাশ ও গৌতম কথা বলেছেন মাটি রক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবে। কীটনাশকসহ বহুমুখী কারণ মাটির উর্ররতা কমলে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ দিয়েও লাভ হবে না বলে জানান গৌতম।

বাংলা ভাষায় যোগাযোগ সহজ হবে বলে এই দুই আন্দোলনকারী বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছেন বলে জানান। পলাশ বলেন, বগুড়া থেকে নাটোর, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া ক্যাম্পেইন করে বেনাপোল পোর্ট হয়ে আবার ভারতে ফিরবেন। আবার ভবির্ষতে পরিবেশ সম্মত যান সাইকেল নিয়ে বড় পরিসরে বাংলাদেশে চাষযোগ্য মাটি রক্ষার ক্যাম্পেইনে ফিরবেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ