বর্ণাঢ্য আয়োজনে তিতুমীর কলেজে “রবীন্দ্র-নজরুল” জয়ন্তী অনুষ্ঠিত

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ “আয়রে আয় ধুমকেতু, আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু”। বাঙালির হৃদয়ে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ আর চেতনায় নজরুল। সৃষ্টিকর্মের মহিমায় রয়েছে চির অম্লান।

সরকারি তিতুমীর কলেজের আয়োজনে আজ বাংলা সাহিত্যের দুই মহীরুহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মরণে জয়ন্তী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। কলেজের শহীদ বরকত মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় উৎসবটি।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে গড়ে উঠে বাঙালির রুচি ও সংস্কৃতি। আর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এসেছিলেন পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার গান নিয়ে। এই দুই ধারার মধ্য বাঙালি খুঁজে পেয়েছে তার আত্মপরিচয়। একজন সঞ্চয়িতার কবি আরেকজন সঞ্চিতার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পরিচালক মিনার রহমান। অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক মালেকা আক্তার বানু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিনার রহমান বলেন, বর্তমান প্রজন্মকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের চেতনাকে হৃদয়ে লালন করতে হবে। এছাড়াও কলেজে বুক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন লাইব্রেরীতে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে বই দিয়ে থাকি। তিতুমীর কলেজে বুক ক্লাব গড়ে উঠলে সার্বিক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় নজরুল। যাকে আমরা সবসময় ধারণ করি হৃদয়ে। রবি ঠাকুরের স্মৃতি চারণ করে বলেন, “অন্ন চাই, প্রাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু, চাই বল, চাই স্বাস্থ্য, আনন্দ-উজ্জ্বল পরমায়ু।” আর, জাতীয় কবি নজরুলের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “বল বীর, বল বীর বল উন্নত মম শির। শির নেহারি আমারি নত শির ওই শিখর হীমাদ্রির।”

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কামরুন নাহার মায়া, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়ল প্রমুখ।

সত্যিই, লাল নীল দীপাবলীর ভাষায় সাহিত্য হচ্ছে আলোর পৃথিবী। সেখানে যা আসে আলোকিত হয়ে আসে ,কালো এসে এখানে নীল হয়ে যায়, অসুন্দর হয়ে যায় সুন্দর শিল্পকলা। বাংলা সাহিত্যকে এমন সুন্দর করে রচনা করেছেন যুগ যুগ ধরে কতো কবি, গল্পকার। তাদের অনেকের নাম আমরা মনে রেখেছি, ভুলে গেছি অনেকের নাম। সময় ভীষণ হিংসুটে সে সবসময় বসে আছে একেকজন লেখকের নাম তার পাতা থেকে মুছে ফেলতে । এভাবে মুছে গেছে কতো কবির নাম কতো লেখকের মুখের ছবি অকুরণ আঙুলে মুছে ফেলেছে সময়। কিন্তু রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্য থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরের বিনির্মাণে বাঙালি আজও ঋণী এই দুই কীর্তিমানের কাছে। তারা ছিলেন নতুন যুগের বার্তাবাহী, উজ্জীবনের শক্তিবাহী। রবীন্দ্র-নজরুলের সাহিত্য শুধু টেবিলে বসে পড়ার জন্যই নয় সমাজ সংস্কারেও কার্যকর প্রভাব রেখেছে এই দুই কীর্তিমানের কর্ম। এই দুই যুগ স্রষ্টার সৃষ্টি সাহিত্য অঙ্গনকে মসৃণ করে চলছে। বাঙালি শতবর্ষপর আজও পালন করছে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উৎসব।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ