অভিবাসীর চাপ : ব্রিটেনে হু-হু করে বাড়ছে বাসা ভাড়া

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর বসবাস ব্রিটেনে। মহামারীর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে না নিতেই বাইরের দেশ থেকে প্রবেশ করেছে বিপুল অভিবাসী। অভিবাসী শ্রমিকরা যোগ দিয়েছে কর্মক্ষেত্রে ফিরেছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ছাত্ররাও। গতি পেয়েছে পর্যটন শিল্প। স্বাভাবিকভাবেই চাপ পড়েছে আবাসন ব্যবস্থায়। সে সূত্র ধরেই ৮ শতাংশ বেড়েছে বাসা ভাড়ার পরিমাণ। ইমোজেন প্যাটিসনের দাবি অনুযায়ী, অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ায় অতিরিক্ত ২ লাখ ৫ হাজার ভাড়া বাসার চাহিদা বেড়েছে। খবর দ্য টেলিগ্রাফ। যুক্তরাজ্যের আবাসনমন্ত্রী মাইকেল গোভ জানিয়েছেন, বাসা ভাড়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা গ্রহণে কোনো প্রকার ত্রুটি রাখা হয়নি। সংস্কার বিলের মাধ্যমে কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে বেসরকারি ভাড়া নীতি। তবে সমালোচকরা সতর্ক করে দিয়েছেন, শুল্কনীতির কারণে বাসামালিকরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়তে পারেন। এদিকে কনজারভেটিভ পার্টির এমপি মারকো লঙ্গি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিলের বিষয়টিকে বিবেচনায় আনতে। না হলে বাসা ভাড়া খাতে সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘‌যে মুহূর্তে আমরা মানুষের ঢল দেখতে পাচ্ছি, এখন প্রধান কর্তব্য হচ্ছে জোগান বাড়ানো। অথচ সেখানে আমরা সংস্কার বিলের মাধ্যমে জোগান কমাচ্ছি। পরিস্থিতি তাই ঝড়ের দিকে রূপ নিতে যাচ্ছে।’ উপাত্ত বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিট অভিবাসীর সংখ্যা ৬ লাখ ৬ হাজারে দাঁড়াবে। বিপরীতে ভাড়ার জন্য বাসার চাহিদা দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজারে। পূর্ববর্তী বিশ্লেষণে বলা হয়েছিল, অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষ যুক্তরাজ্যে আসার পর বেসরকারি ভাড়া বাসায় থাকার জন্য তৎপরতা চালায়। বিশেষ করে তারা আসার প্রথম দুই বছরে।

প্রাক্কলনে বলা হয়েছিল, ভাড়া দেয়ার মতো বাসার সংখ্যা মার্চের দিকে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে। একই সঙ্গে ৪ শতাংশীয় পয়েন্ট কমবে শূন্য বাসার হার। কিন্তু যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের ভাড়ার হার বেড়েছে ৮ শতাংশ। বছরওয়ারি হিসেবে ডিসেম্বরে এর হার দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১ শতাংশ। তবে বাসা বাড়ার প্রভাব সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়েছে শহরে। বিদেশীদের অধিকাংশই বসবাস করে লন্ডন ও সাউদইস্টে। দ্য মাইগ্রেশন অবজারভেটরির অনুসারে, কেবল লন্ডনেই বসবাস করে ৩৫ শতাংশ অভিবাসী। লন্ডনে বার্ষিক বাসা ভাড়া ডিসেম্বরে ১৭ শতাংশ বেড়েছিল। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ও গ্লাসগোয় ভাড়া বেড়েছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৬ ও ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। চাহিদা বাড়ার ঘটনা পরবর্তী সময়ে বাসা ভাড়াকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। ২০২১ সালে মহামারীসংক্রান্ত বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়ার পেই বাসা ভাড়ার পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে যুক্তরাজ্যে। সরকারি তথ্যে দেখা যায়, কেবল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত অভিবাসী গেছে ৫ লাখ ৪ হাজার। শ্রমশক্তির ঘাটতি পূরণের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার ক্রমেই অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাত এক্ষেত্রে সবার আগে। শ্রমিক ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ২০২৩ সালের মার্চে বেড়ে এক লাখে উত্তীর্ণ হয়েছে। মহামারী ও ব্রেক্সিটপূর্ব অভিবাসী সংখ্যার চেয়ে তা চার গুণ বেশি। ডিএলইউএইচসির মুখপাত্র দাবি করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমাদের সংস্কার নীতিমালা বাসা ভাড়াকে ব্যাহত করবে কিংবা বাসামালিককে নিরুৎসাহিত করবে। বেসরকারি খাত দ্বিগুণ হয়েছে ২০০৪ সালের তুলনায়। ভালো বাসামালিকদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা এখনো এ খাতে বিদ্যমান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ