ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ সব কর্মস্থল, এয়ারপোর্ট, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিং মলের মতো জনসমাগমস্থলে এবং সরকারনিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের সাক্ষরের পর ৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

জনস্বার্থে দায়ের করা এই রিটের রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পানের বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ। এটা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একটি শিশুর জন্মের পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত তার মাতৃদুগ্ধ প্রয়োজন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মায়েরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং রুমের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। কোনো মা ও শিশু যেন এই রিটের পিটিশনারদের মতো পীড়াদায়ক পরিস্থিতিতে না পরে।

সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ দ্রুততম যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং রুম স্থাপনের সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও রায়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হাইকোর্ট। রায়ের শেষাংশে আদালত বলেন, এর আগে কখনোই ৯ মাস বয়সী শিশু রিট দায়ের করেনি। এই শিশু ইতিহাস সৃষ্টি করলো।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দেশের সকল কর্মক্ষেত্র, এয়ারপোর্ট, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনে, শপিং মলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এছাড়াও পাবলিক প্লেস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে নীতিমালা তৈরি করতে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চান আদালত। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব রুল জারি করেন।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এসব রুলে জবাব দিতে বলা হয়।

পরে এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ২ এপ্রিল বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিলা রহমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের গত ২২ অক্টোবর নিরাপদ পরিবেশে ও স্বাচ্ছন্দ্যে মায়ের বুকের দুধ পান করতে ৯ মাসের শিশু উমাইর বিন সাদিকের পক্ষে তার মা ইশরাত হাসান এ রিট দায়ের করেন।

রিটে বলা হয়, এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে যেখানে কোনো মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে কোনো অস্বস্তি বোধ করবে না বা যৌন হয়রানির শিকার হবে না।

রিটকারী বলেন, অনেক কর্মস্থলে বা বাস, ট্রেন স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকায় মায়েদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিরাপদ পরিবেশের অভাবে ও যৌন হয়রানির ভয়ে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ পান করাতে পারেন না। অথচ একজন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মায়ের বুকের দুধ। আমার মত হাজার হাজার মা এই সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই রিটে এ সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনও সংযুক্ত করা হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০