ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করবে ঢেঁড়স

বগুড়া নিউজ ২৪: বর্তমান জীবনযাত্রায় ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরলের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা সাধারণ হয়ে উঠেছে। ওষুধ এবং নিয়মিত খাদ্য রুটিন ঠিক করলেও, উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি নজর দেওয়া জরুরি। ঢ্যাঁড়শ রান্নাঘরে পাওয়া একটি সাধারণ সবজিকে অনেকেই খুব একটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এই ঢ্যাঁড়শ আমাদের শরীরে অজান্তেই অনেক উপকার করে। ঢ্যাঁড়শের কিছু গুণ যা শরীরকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে।

ঢ্যাঁড়শে শরীরের ফাইবার, প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এছাড়া ঢ্যাঁড়শে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে, এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণে সুপারফুড হিসেবে কাজ করে। ক্যালোরি কম থাকলেও ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেট সমৃদ্ধ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যার মধ্যে রয়েছে পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড, প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
এনআইএইচ এর গবেষণা অনুযায়ী, ঢ্যাঁড়শ রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ঢ্যাঁড়শ থাকা ফাইবার বা আঁশ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। টাইপ ওয়ান, টাইপ টু ডায়াবেটিসে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ঢ্যাঁড়শ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত খাবারে ঢ্যাঁড়শ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে ঢ্যাঁড়শ

এনআইএইচ এর গবেষণা অনুসারে, কোলেস্টেরল কমাতে পারে ঢ্যাঁড়শ। ঢ্যাঁড়শে থাকা ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের কোলেস্টেরলের অণুর সঙ্গে আবদ্ধ হয়, যা রক্তপ্রবাহে শোষিত হতে বাধা দেয়। এতে শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমে গিয়ে হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়। ঢ্যাঁড়শে উপস্থিত পলিফেনল রক্ত জমাট বাঁধা এবং ফ্রি র‍্যাডিক্যাল ড্যামেজ দূর করে হৃৎপিণ্ডের জটিলতা এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের প্রদাহ কমিয়ে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ঢ্যাঁড়শ মিউসিলেজ নামের উপাদানটি হজমের সময় কোলেস্টেরলের সঙ্গে মিশে গিয়ে দেহ থেকে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই খাবারের তালিকায় ঢ্যাঁড়শ রাখলে হার্ট ভালো রাখা সহজ হবে।

ওজন কমাতে

ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ রাখতে পারেন। ঢ্যাঁড়শে থাকা উচ্চ ফাইবারযুক্ত উপাদান ওজন কমাতে কাজ করে। কারণ ঢ্যাঁড়শ খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে ক্ষুধা কম লাগে। তাই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার ভয় থাকে না। যে কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

যেভাবে খেতে পারেন

ঢ্যাঁড়শ নানানভাবে খাওয়া যেতে পারে। ভর্তা, ভাজি, ঝোলের তরকারি করে। তবে অল্প তেল এবং অল্প মসলায় রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট কম হয়। স্যুপ এবং স্টু করে খেতে পারেন। ঢ্যাঁড়শের পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে ডুবো তেলে ভাজার পরিবর্তে হালকা করে ভেজে বা ভাপিয়ে খেতে পারেন। বেকড চিপস করে খেলে ভালো লাগবে।

সতর্কতা
ঢ্যাঁড়শ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টকজাতীয় খাবার (যেমন লেবু, আমলকী) খেলে গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে, তাই এই খাবারগুলো একসঙ্গে না খাওয়াই ভালো।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফেসবুকে আমরা

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০