রক্ত দিয়ে খাতা-কলমে শহীদ, বগুড়ায় জাতীয় দিবসেও নেয়া হয়না তার নাম

বগুড়া সারিয়াকান্দির উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বালুয়ারতাইড় গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মো. মমতাজুর রহমান। তিনি বালুয়ারতাইড় গ্রামের মৃত আমির উদ্দিন ফকিরের ছেলে। তিন ভাই চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শহীদ হন তিনি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস কুদ্দুস বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা মমতাজুর রহমানের নাম শহীদের খাতায় লেখা রয়েছে ঠিকই, তবে আজ পর্যন্ত তাকে নিয়ে কোন আলোচনা ও স্মরণ সভা করা হয় নি। তার নামে করা হয়নি কোন রাস্তা বা এলাকার নাম। প্রথমদিকে সারিয়াকান্দিকে মমতাজ নগর করার কথা বলা হলেও পরবর্তী তা বিভিন্ন কারণে বাস্তবায়ন করা হয়নি।’

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মমতাজুর রহমান ভারত থেকে রণকৌশলের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর মুজিব বাহিনীতে তালিকা ভুক্ত হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন। তিনি বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের টিম লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

যুদ্ধে অংশ নেয়ার আগে তিনি ফুলবাড়ী গমীর উদ্দিন বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তবে বেশিদিন শিক্ষকতা করতে পারেননি তিনি। সব কিছু বিসর্জন দিয়ে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

২৮শে নভেম্বর ভোর থেকে সারিয়াকান্দি সদরে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে সম্মূখ যুদ্ধ শুরু হয়। সহযোদ্ধাদের নিয়ে লড়াইয়ের এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনীর বুলেটের আঘাতে শহীদ হন তিনি। তখন সময় সকাল ৮ টা, সারিয়াকান্দি সদর থেকে ১কিলোমিটার দক্ষিণে গোসাইবাড়ীর-সোনারপাড়া বাঙ্গালী নদীর পাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মমতাজুর রহমান অসাধারণ রণকৌশল নিয়ে যুদ্ধ করতেন। কোনো অবস্থাতেই পিছপা হওয়ার মত ছেলে ছিলেন না তিনি। দেশকে হানাদার মুক্ত করাটা ছিল তার নেশা।
মমতাজুর রহমান শহীদ হওয়ার পরপরই মুক্তিযোদ্ধারা সারিয়াকান্দি সদরে হানাদার বাহিনীকে ঘেরাও করে করে যুদ্ধ করতে থাকেন। ওই দিনই সারিয়াকান্দি উপজেলা হানাদার মুক্ত করা হয়। ২৮ নভেম্বর সারিয়াকান্দি হানাদার মুক্ত দিবস।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফেসবুকে আমরা

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০