ধুনট প্রতিনিধিঃ বগুড়ার ধুনটে প্রতারণা করে কলেজছাত্রীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শাহীন(৩৫) নামের এক ব্যক্তি উধাও হয়েছেন। এই শাহীনের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগি ছাত্রী বাদী তার হবু বর শাহীনে ও বিয়ের ঘটক ধুনট সদর ইউনিয়নের শহিদুল ইসলামের(৫৫) বিরুদ্ধে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগি কলেজছাত্রীর নাম রোজিনা আক্তার। তিনি ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের দিনমজুর রমজান আলীর মেয়ে। রোজিনা ধুনট মহিলা কলেজের ডিগ্রী ৩য় বর্ষের ছাত্রী।
এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ধুনট সদর ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে ঘটক শহিদুল ইসলাম (৫৫) ও প্রতারক হবু বরের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।লিখিত
অভিযোগে বলা হয়েছে, দিনমজুরের কাজ করার সুবাদে ধুনট উল্লাপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে ঘটক শহিদুল ইসলামের সাথে রোজিনার বাবা রমজান আলীর পরিচয় হয়।
সেই সুবাদে রোজিনার বিয়ের জন্য একজন পাত্রের সন্ধান দেয় ঘটক শহিদুল ইসলাম। পরবর্তীতে রোজিনার বাড়িতে শাহীন নামে এক ব্যক্তিকে পাত্র সাজিয়ে নিয়ে যান শহিদুল। দুই পক্ষের পছন্দ হওয়ায় তাদের বিয়ের কথাও চূড়ান্ত হয়।
কিন্তু বিয়ের আগে রোজিনাকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সহকারী পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখায় হবু বর শাহীন।
কিন্তু রোজিনার বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর গরু-ছাগল বিক্রি করে ১ লাখ টাকা জোগাড় করে ঘটক শহিদুল ও হবু বর শাহীনের হাতে তুলে দেয় রোজিনার বাবা।
কিন্তু এরপরও শাহীন ও ঘটক শহিদুল বিভিন্ন অজুহাতে আরো টাকার জন্য চাপ দেয়। পরে বাধ্য হয়ে রোজিনা আকতার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আরো ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা শাহীনকে দেন।
এরপর ২০২০ সালের ২৪ মার্চ শাহীন ধুনট পোস্ট অফিসের মাধ্যমে রোজিনার ঠিকানায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী পরিদপ্তরের পরিচালক আসাদুজ্জামান ও নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমানের স্বাক্ষরিত একটি নিয়োগপত্র পাঠায়।
গত ১৫ মার্চে স্বাক্ষরিত স্মারকের সেই নিয়োগপত্রে রোজিনা আকতারের পদায়নকৃত দপ্তর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগ, পাউবো, ফরিদপুর উল্লেখ্য ছিল।
কিন্তু নিয়োগপত্র নিয়ে রোজিনা আকতার বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্রটি ভুয়া বলে আখ্যায়িত করে। এরপর থেকেই রোজিনার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন প্রতারক হবু বর শাহীন।
রোজিনা আকতার জানান, সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভুয়া নিয়োগপত্র পাঠিয়ে ঘটক শহিদুল ও প্রতারক শাহীন ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ কারণে কিস্তির টাকা পরিশোধের দুচিন্তায় তার বাবা ও মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই ওই প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তার করে আইনগত সহায়তার দাবি জানান তিনি।
বগুড়ার ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দ্রুত প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করা হবে।