বগুড়া ডেস্কঃ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর মা ইলিশ ধরা পড়ছে। বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ ইলিশেই ডিম দেখা যাচ্ছে। জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, যথাসময়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। যার কারণে মেঘনায় জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ উঠে আসছে।
তবে ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এ ২২ দিনে যে ডিম ছাড়া হয় তা দেশের ইলিশ উৎপাদনে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের মাছ বাজার ও উত্তর তেমুহনী মাছ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সরকার ইলিশ উৎপাদনের জন্য নদীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ অঞ্চলের জেলেরা সে আইন স্বতস্ফূর্তভাবে পালন করে আসছে। তবে সঠিক সময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে না। ডিম ছাড়ার অনেক আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আবার ডিম ছাড়া শেষ না হতেই নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হয়। সঠিক পর্যালোচনার মাধ্যমে নদীতে নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করা উচিত।
তবে চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র ও জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ উৎপাদন ও আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। ১৩ অক্টোবরের পূর্ণিমা ও ২৮ অক্টোবরের অমাবস্যাকে ঘিরে ২২ দিন নদীতে মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বছরের এ সময়টিতে মা ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে। একটি ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। আর এ সময়টিতে একটি ইলিশ প্রায় ৬৫ শতাংশ ডিম ছাড়ে। যা দেশে ইলিশ উৎপাদনে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু আরও বেশি সময় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আহরণ করতে পারবে না।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহ বলেন, বৈজ্ঞানিক গবষেণা অনুযায়ী ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে। সেই অনুযায়ী গত কয়েক বছর এ সময় নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আমাদের গবেষণা মতে- লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে প্রায় ৪৫ শতাংশ ইলিশ ডিম ছেড়েছে।
চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. মো. আনিছুর রহমান বলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অক্টোবরের এ ২২ দিন মা ইলিশের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এর মধ্যে যে ডিম ছাড়া হয়েছে তা ইলিশ উৎপাদনে যথেষ্ট। ডিমওয়ালা ইলিশ সারা বছরই থাকে। নিষেধাজ্ঞার সময় আর কয়েকদিন বাড়ানো হলে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়বে না।