শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবি শ্যামল ভট্টাচার্য্যের ২য় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে ২৩ ডিসেম্বর ৩টায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাসদ বগুড়া জেলা আহ্বায়ক অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, সঞ্চালনা করেন বাসদ বগুড়া জেলা সদস্যসচিব অ্যাড. দিলরুবা নুরী।
বক্তব্য রাখেন প্রয়াত শ্যামল ভট্টাচার্য্যর পুত্র অভ্র ভট্টাচার্য্যর অভি, বগুড়া জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামাপদ মোস্তাফী, সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার গোপাল চন্দ্র সরকার, বগুড়া নাট্যদলের সভাপতি মির্জা আহসানুল হক দুলাল, সিপিবি বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, বাসদ বগুড়া জেলা কমিটির সদস্য সাইফুজ্জামান টুটুল প্রমুখ। আলোচনা সভা শুরুতে প্রায়াত শ্যামল স্যারে প্রতিকৎতিতে শ্রদ্ধানিবেদন ও নিরবতা পালন এবং শেষে সংক্ষিপ্ত সংগিতানুষ্ঠান ও ডুকুমেন্টারি প্রদর্শনী হয়।
অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, “ শ্যামল ভট্টাচার্য্য ব্যাক্তিচিন্তাকে অতিক্রম করে সমাজ ভাবনায় তাড়িত ছিলেন বলে তিনি সকলের হতে পেরেছিলেন, তা নাটক হোক, শিক্ষকতা পেশায় হোক, জীবন ভাবনায় হোক সমস্ত জায়গায় তিনি সমাজ নিয়ে ভাবতেন। তার এই চেতনাটা আজ খুব জরুরী।”
অভ্র ভট্টাচার্য্য অভি বলেন, “শ্যামল ভট্টাচার্য্যকে বুঝতে হলে তার পুরো জীবনটাকে বুঝতে হবে। তিনি যা যা করেছেন সব বুঝতে হবে। তিনি অনেক কিছু করতে পারতেন, বগুড়ার মানুষ তার কাছ থেকে অনেক কিছু করে নিতে পারতেন। তার যা দক্ষতা ছিল বগুড়ার মানুষ তা নিঙরে নিতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি কারণ যে সমাজ আমরা তৈরি করেছি সেই সমাজ সবকিছু খেয়ে ফেলে, সবকিছু হজম করে ফেলে। যে সমাজে একজন মানুষকে পিটিয়ে মারার জন্য পঞ্চাশজন মানুষকে পাওয়া যায় সেখানে একজন মানুষকে বাঁচানোর জন্য একটি মানুষ পাওয়া যায় না। সেই সমাজে শ্যামল ভট্টাচার্য্য ছিলেন উজান গাঙের মাঝি।”
স্মরণ সভায় অন্যান্য আলোচকবৃন্দ বলেন, পুঁজিবাদী সমাজের ভোগবাদী মানসিকতা যখন সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে চারিদিকে অক্রমন করছে, তখন নির্মোহ চরিত্রের মানবদরদী মানুষের ভীষণ সংকট এই রকম এক পরিস্থিতিতে আমরা ২০২০সালের ০৪ নভেম্বর তারিখে শ্যামল ভট্টাচার্য্যর মতো আপোষহীন, প্রচারবিমুখ, অসাম্প্রদায়িক, সংস্কৃমিনা শিক্ষানুরাগী একজন মানুষকে শারীরীক ভাবে হারিয়েছি। কিন্ত স্যার আমাদের চেতনায়-স্বপ্নে অমর হয়ে থাকবেন চিরকাল। তার কাঙ্খিত সমাজ নির্মাণের সংগ্রামের যে বীজ বপন করে গিয়েছেন তাদের সংগ্রামের মাঝেই তিনি বেঁচে থাকবেন।