বগুড়া নিউজ ২৪ঃ চা পানের শুরু চীনে ২০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে। মধ্য চীনের ইয়াং লিং সমাধিস্তম্ভে প্রাচীনকালে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে যেসব নৈবেদ্য দেয়া হতো তার মধ্যে পাতা দিয়ে তৈরি শুকনো কেক দেখা যেতো।
এইসব পাতার মধ্যে থাকা ক্যাফেইন এবং থিয়ানিন প্রমাণ করে যে, সেগুলো প্রকৃতপক্ষে ছিল চা পাতা যা কিনা মৃতদের সাথে দিয়ে দেয়া হতো তাদের পারলৌকিক জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবে। দুশো বছর আগে এভাবে চায়ের ব্যবহার হওয়ার সময়কালের কথা জানা যায়।
পানীয় হিসেবে চা আবিষ্কার ছিল একটি দুর্ঘটনা। প্রচলিত আছে, চীনা সম্রাট শেন নুংস এর গরম পানির কাপে একদিন হঠাৎ করেই একটি চা পাতা পড়ে। আর এভাবেই চা আবিষ্কার হয়। পরবর্তী বেশ কয়েক বছরের মধ্যেই তা পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ধারণা করা হয়, পানির পরে চা সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ভোগ্য পানীয়।
এমনকি টি ব্যাগও আবিষ্কৃত হয়েছে ঘটনাক্রমে। ১৯০৮ সালে থমাস সুলিভান নামের এক ব্যক্তি তার খদ্দেরদের জন্য টি ব্যাগের স্যাম্পল তৈরি করেন। তার ধারণা ছিল চা বানানোর সময় ব্যাগটি খালি করা হবে। তবে খদ্দেররা মনে করেন টি ব্যাগটি গরম পানিতে চুবিয়ে তা থেকে রস বের করে চা বানাতে হবে। আর এভাবেই টি ব্যাগ আবিষ্কৃত হয়। ব্রিটিশ আমলে রাতের খাবারের সঙ্গে চা পরিবেশন করা হতো। আর ব্রিটিশরা সাধারণত উঁচু টেবিলের ওপর বসেই রাতের খাবার খেতেন। সেখান থেকেই হাই টি নামটিও আসে।
সপ্তদশ শতকে চীন এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরলে ব্রিটিশদের চায়ের জন্য অন্য দেশের দিকে মনোযোগ দিতে হয়।
স্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, যেটি বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতো তারা একজন স্কটিশ উদ্ভিদ বিজ্ঞানী রবার্ট ফরচুনকে নিয়োগ করলো যিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিদেশি বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ এবং সেগুলো অভিজাতদের কাছে বিক্রির জন্য পরিচিত ছিলেন।
তাকে দায়িত্ব দেয়া হল গোপনে চীনে যাওয়ার জন্য এবং সেখান থেকে ভারতে চা গাছ পাচারের জন্য – উদ্দেশ্য সেখানে বিকল্প একটি চা শিল্প গড়ে তোলা।
আশ্চর্যজনকভাবে, তিনি ২০,০০০ চা গাছ ও চারাগাছ চীন থেকে দার্জিলিং-এ রপ্তানি করেন।
তর্ক-সাপেক্ষে অনেকেই মনে করেন, রবার্ট ফরচুনের এই গোপন কর্মকাণ্ডের ফলাফলের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসেবে ভারতকে চায়ের আবাসস্থল হিসেবে পরিণত করেছে।