বাগেরহাটের বিএডিসি’র খাল পুনঃ খনন কাজে সুভংকরের ফাঁকি

বগুড়া নিউজ ডেস্কঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসি’র সেচ প্রকল্পের খাল পুনঃখননের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসি। প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই সুভাংকরের ফাঁকি দিয়ে রাতের আধাঁরে চলে যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট তদারকী কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনকে কোন তোয়াক্কা না করে দায়সারাভাবে মাঠ পর্যায়ের কাজ সমাপ্ত দেখিয়েছেন বিএডিসি কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের মংলা-মোরেলগঞ্জ সিমান্তবর্তী ডেউয়াতলা ব্রীজ সংলগ্ন বাজার হয়ে খনিরখন্ড পালের খন্ড পর্যন্ত দু’পাড়ের আড়াই কিলোমিটার ভোলার খাল পুনঃখনন এ প্রকল্পের নাম বৃহত্তম খুলনা ও যশোর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে কাজ সমাপ্ত দেখানো হয়েছে।
এ কাজে ব্যায় ধরা হয়েছে ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ২শ’ টাকা। এ খাল খননে ২ হাজার ঘন মিটার মাটি উত্তোলনের কথা খাকলেও দায়সারাভাবে এ কাজ কাগজে কলমে সমাপ্ত দেখিয়েছে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও উপজেলার এ প্রকল্পের মাধ্যমে দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের দক্ষিণ জোকা, গোবর দিয়া খালে ৪ কিলোমিটার পুনঃখননে ৩১ লক্ষ টাকা, দক্ষিণ জোকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ২ ব্যান্ডের বক্স কালভার্ড নিমাণ ১৫ লক্ষ টাকা ৩টি প্রকল্পের ৬২ লাখ ৬৮ হাজার ২শ’ টাকা ব্যায় এ কাজে অনিয়ম ও সঠিকভাবে হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে জিউধরা ইউনিয়নে প্রকল্প কাজের সংশ্লিষ্ট স্থানের ইউপি সদস্য আরিফুল কবির বাচ্চু, চাঁন মিয়া শেখ, স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী হাকিম হাওলাদার, শিক্ষক আ. ছালাম, কৃষক রফিকুল হাওলাদার, পালের খন্ড গ্রামের সুন্দর আলী, তহের গাজী, লাভলু মাঝি, ডেউয়াতলা গ্রামের রুহুল আমীন শেখ, হাফিজ শেখ, শিক্ষক সুজন হাওলাদারসহ একাধিক ভূক্তভোগীরা জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কোন মতে মাটি উত্তোলন করে ফেলে রেখে যায়।

যদিও খালের গভিরতা ৪ফিট হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি হয়নি। দু’পাড়ে ড্রেসিং করে চলাচলের রাস্তা করে দেওয়া আড়াই কিলোমিটার খাল খননে বিভিন্ন পয়েন্টে পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল সংযোগে পাইপ দিয়ে পয়েন্ট তৈরি না করে কোনোমতে ২/৪টি পাইপ এলোপাতাড়ি ফেলে রেখেছেন। এ পাইপ সংযোগের নাম করে স্থানীয়দের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার করে উত্তোলন করা হয়েছে। এসব টাকা নিয়েও পাইপ সংযোগ না দিয়ে হঠাৎ করে রাতের আধাঁরে উধাও হয়েছে তারা।

এ সর্ম্পকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, বিএডিসি প্রকল্পের এ কাজ শুরুতেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছে একাধিকবার শিডিউল চাওয়া হলেও তালবাহনা করে এড়িয়ে যান। পুনঃখননে চরম অনিয়ম হয়েছে। ডেসিং সহ অনেক কাজই না করে ফেলে রেখে যায়, এমনকি যে ঘরটিতে শ্রমীকরা থাকতো সে ঘরে ভাড়াও না দিয়ে চলে গেছেন।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফ বলেন, বিএডিসির এ উপজেলায় কাজের বিষয় তিনি অবহিত নয়, তবে সেচ প্রকল্পের কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকলেও তদারকির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ তাকে অবহিত করেননি।

কথা হয় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি প্রকৌশলী এস এম সুজা উদ্দিন তিনি জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এ উপজেলায় খাল পুনঃখননসহ ৩টি প্রকল্পের কাজেই সঠিক ভাবে সমাপ্ত হয়েছে। অনিয়মের বিষয়গুলো ইতোপূর্বে ইউপি চেয়ারম্যানরা উত্তোলন করেননি। ডেউয়াতলা খাল খননে কাজের ডেসিং, রাস্তা পানি নিষ্কাশনের পাইপ সংশ্লিষ্ট এসব কাজ তাদের সিডিউলে নেই। তাই তারা করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেচ উন্নয়ণ প্রকল্পের উপজেলা সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিএডিসি কর্তৃক এ উপজেলায় খাল পুনঃখননসহ ৩টি প্রকল্পের কাজের বিষয় তিনি অবহিত নয়। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে কোন তোয়াক্কা না করেই মাঠ পর্যায়ের কাজগুলোর ফেলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা তাকে অবহিত করেছেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০