বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শাখা ডাকঘরগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শাখাগুলো খোলা রেখে গ্রাহকদের সেবা প্রদান করার কথা থাকলেও অনেক শাখা খোলাই হয় না। কিছু কিছু সকাল ১১টার দিকে খোলা হলেও দুপুরের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসীর। উপজেলা পোস্ট মাস্টার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলছেন, বেশির ভাগ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্তরা অফিসের নির্দেশনা মানছেন না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, পীরগঞ্জ উপজেলা ডাকঘরের অধীনে ২০টি শাখা ডাকঘর রয়েছে। আগে এগুলোর পাকা ভবন না থাকলেও এখন বেশিরভাগের ভবন হয়েছে। শাখা ডাকঘরের কোনটিতে ইডিএ, ইডিডিএ, ইডিএমসি পদে ৩ জন, আবার কোনটিতে ইডিডিএ, ইডিএমসি পদে ২ জন করে কর্মরত আছেন। শাখা ডাকঘরগুলো থেকে চিঠিপত্র, মানি অর্ডার, অনলাইন সেবাসহ পার্সেল আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে ডাক বিভাগের সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এসব শাখা খোলা হয়েছে। শাখাগুলো থেকে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ডাক বিভাগ সংক্রান্ত সকল প্রকার সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও গ্রাহকরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তারা জানান, ওই সময়ে বেশিরভাগ শাখা ডাকঘর খোলাই হয় না। হাতে গোনা কয়েকটি ১১টার পর খোলা হলেও দুপুরের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ডাকঘরগুলোতে এসে গ্রাহকদের ঘুরে যেতে হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে মানি অর্ডারের টাকা পেতে অনেক বিলম্বের শিকার হতে হয়। মানি অর্ডার আসলেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা এখনো আসেনি অজুহাতে কালক্ষেপণ করেন। অথচ গ্রাহকদের সেবা প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বেলা ২টা পর্যন্ত অফিসে থাকার কথা। কিন্তু তারা এ নিয়ম মানছেন না। অথচ প্রতি মাসে ইডিএ পদে কর্মরতরা ৪ হাজার ৪ শ টাকা, ইডিডিএ পদে কর্মরতরা ৪ হাজার ২ শ টাকা এবং ইডিএমসি পদে কর্মরতরা ৪ হাজার ১ শ টাকা হারে ভাতা পান। তারা নিয়মিতভাবে ভাতা উত্তোলন করলেও নিজেদের দায়িত্বে ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে ডাক বিভাগের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি পোস্ট অফিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন গ্রাহকরা। তারা বিকল্প হিসেবে কুরিয়ার, বিকাশসহ বিভিন্ন অনলাইন কম্পানির দিকে ঝুঁকছেন।
নারায়নপুর শাখা ডাকঘর এলাকার বাসিন্দা রায়হান কবির, বাদল হোসেন, বিপ্লব হাসানসহ বেশ কয়েকজন জানান, তাদের শাখা ডাকঘরটি কখন খোলা হয় আর কখন বন্ধ করা হয় এলাকার মানুষ জানেন না। এটি আদৌও খোলা হয় কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে মানুষের।
বুধবার সকাল সাড়ে পোনে ১২টায় উপজেলার ভাদুয়া শাখা ডাকঘরে গিয়ে দেখা যায়, এর মূল ফটকে তালা ঝুলছে। স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাশের গ্রামের প্রদীপ বাবু এর দায়িত্বে আছেন। তিনি মাঝে মাঝে এসে দু’এক ঘণ্টা থেকে চলে যান। বাকি স্টাফদের কথা তারা জানেন না। এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য প্রদীপ বাবুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার দবিরুল ইসলাম বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে জানান, শাখা ডাকঘরগুলো সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগই এ নির্দেশনা মানছেন না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাছাড়া এ বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করার দরকারও বলে মন্তব্য করেন তিনি।