মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গুলিতে ২ রোহিঙ্গা নারী নিহত

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ  আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের আদেশের রায়ের দু’দিন পার হতে না হতেই আবারও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেনে রাখাইনের দুই রোহিঙ্গা নারী। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দেশটির একজন পার্লামেন্ট সদস্য ও একজন গ্রামবাসীর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত একটি গ্রামে সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে নিহত হন তারা।

স্থানীয়রা জানান, উত্তর রাখাইনের কিন তাউং গ্রামে এ হামলায় নিহতদের একজন গর্ভবতী ছিলেন। একই ঘটনায় গ্রামটির অপর সাত ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

উত্তর রাখাইনের বুথিডাউং শহরের সংসদ সদস্য মং কি আউ বলেন, কোনো যুদ্ধ ছাড়াই কিন তাউং গ্রামের কাছে অবস্থান করা সেনাবাহিনীর এক ব্যাটালিয়ন মধ্যরাতে গ্রামটিতে গোলাবর্ষণ শুরু করে।

কিন তাউং থেকে মাইলখানেক দূরে বসবাসকারী রোহিঙ্গা গ্রামবাসী সো তুন ওও ফোনে রয়টার্সকে গোলার বিস্ফোরণে দুটি বাড়ি ধ্বংস হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মিলিটারিরা সব সময় ভারী অস্ত্র থেকে গোলাবর্ষণ করে। যে এলাকাকেই সন্দেহজনক মনে হয় সেখানেই ভারী অস্ত্রের গোলাবর্ষণ করে তারা। আমরা ভয়ে থাকলেও অন্য কোথাও পালিয়ে যাওয়া অসম্ভব।

এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। হামলার দায় বিদ্রোহীদের দিয়েছে তারা। ভোরে বিদ্রোহীরা একটি সেতুতে আক্রমণ চালিয়েছিল বলে জানিয়েছে তারা।

এ নিয়ে রাখাইনে এ বছর দ্বিতীয় বারের মতো কোনো বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটলো। এর আগে ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) কাউক ইয়ান গ্রামে এক মাইন বিস্ফোরণে চার রোহিঙ্গা শিশু নিহত হন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে কথিত ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (আরসা) সেনাচৌকিতে হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এ আগ্রাসনে রাখাইনের অন্তত ২৪ হাজার রোহিঙ্গা অধিবাসী নিহত হন। হামলা থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

রাখাইনে রোহিঙ্গা বিরোধী এ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ডিসেম্বরে শুনানির পর বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) মামলার অন্তর্র্বতী আদেশ দেন আদালত। এতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ