‘শেখ হাসিনা স্বীকার করেছেন সরকার গঠনের জন্য ভোটের প্রয়োজন হয় না’

রিজভী বলেন, “গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কে ভোট দিল, কে দিল না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ’। এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা সরকার গঠনের জন্য দেশের জনগণ কিংবা জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয় না।”

আজ (সোমবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রিজভী বলেন, “খালেদা জিয়ার প্যারোলের আবেদন ও পরিবারের দেয়া চিঠির বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে অবগত নই। যখন জানতে পারব তখন অবশ্যই আপনাদের জানাব। তার স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার তুলে ধরছি। তার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। সেজন্য আমরা এই মুহূর্তে তার মুক্তি দাবি করছি।”

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য সারাদেশে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত আছে। দু’দিন আগেও আমরা একটা বড় সমাবেশ করেছি। আমরা এখনও তার মুক্তি দাবি করছি।”

এর আগে লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথিত স্লোগানের আড়ালে গত এক দশকে বাংলাদেশ হারিয়েছে তার সব অর্জন আর মর্যাদা। গুম-খুন, অপহরণের ফলে উদ্ভূত ভয়ে জনগণকে পরিণত করা হয়েছে একটি আত্মমর্যাদাহীন জাতিতে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি বলেছেন, ‘ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে দেবে।’ ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন, যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য লজ্জার ও অপমানজনক। লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে, অসংখ্য মা বোনের সম্মান-সম্ভ্রমের বিনিময়ে ৭১ সালে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় নয়। অথচ বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে ভারত সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকমের প্রতিবাদ জানানো হয়নি।”

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, “গত এক দশকে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে মাথা এতটাই নত করেছে যে এখন আর বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, বাংলাদেশের জনগণের সম্মান ও মর্যাদার পক্ষে যা হয়েছে, তা মর্যাদাহানিকর। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কারণে আজ বাংলাদেশের জনগণ হেয় হচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ