বগুড়া নিউজ ২৪ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করতে জার্মানীসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য এক বিরাট বোঝা এবং তারা সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। মিয়ানমারকে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে জার্মানীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আরো ভূমিকা নেয়ার অনুরোধ করেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জার্মানীর সফররত অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. গার্ড মুলার সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি একথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের এ সম্পর্কে অবহিত করেন। খবর বাসস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার আগমন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জন্য একটি বড় সমস্যার কারণ হয়েছে, কেননা তারা সংখ্যায় স্থানীয় জনগণকে ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, অনেকেই (রোহিঙ্গারা) নিজেদেরকে সন্ত্রাস এবং মানব পাচারে জড়িয়ে ফেলার সুযোগ নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ছাড়াও বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যাতে করে মিয়ানমার কতৃর্পক্ষ স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘এরপর মিয়ানমার আর রোহিঙ্গাদের ফেরত নিচ্ছে না এবং তারা চুক্তিও মানছে না’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা পরিবারে নবীন সদস্য রয়েছে, যারা তাদের পিতা-মাতাকে হারিয়েছে‘ কাজেই খুব স্বাভাবিকভাবেই তারা সন্ত্রাসে জড়াচ্ছে এবং মানব পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ছে। ‘তাদের এবং আমাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই আমরা রোহিঙ্গা শিবিরের চারপাশে বেড়া নির্মাণ করছি’।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের সকল প্রকারের সাহায্য প্রদান করছে। ঐ এলাকার নিরাপত্তার জন্য ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে।
জার্মান মন্ত্রী বলেন, তাঁর দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরো কিভাবে যুক্ত হতে এবং বাংলাদেশকে সাহায্য করতে পারে তা বিবেচনা করবে। ড. মুলার প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি আগামীকাল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন। ‘আমি মনে করি তাদের নির্বাচনের পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং জার্মান মন্ত্রী বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। এরমধ্যে রয়েছে- জার্মান বিনিয়োগ, তৈরি পোশাক শিল্প, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়ন, পানি শোধন প্রকল্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয়।