প্রতিদিনের ইফতারে খেজুর খেলে যত উপকার মিলবে

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউনের মাঝেই পালিত হচ্ছে এবারের রমজান। ঘরবন্দি এই সময়টায় তাই নিজেকে সুস্থ রাখা একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। আর রমজান মাসের সঙ্গে খেজুরের সম্পর্কটি বহু পুরনো। মধ্য প্রাচ্যের শুকনো ও মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি পুরো বিশ্বজুড়েই পরিচিত তার স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য। সারা বছরজুড়ে খেজুর পাওয়া গেলেও বিভিন্ন জাতের খেজুর সহজলভ্য হয় এই সময়টাতে। রমজানে প্রতিদিনের ইফতারে খেজুর খেলে যে সকল উপকার মিলবে সেটাই তুলে আনা হয়েছে আজকের এই ফিচারে।

পর্যাপ্ত শক্তির উৎস খেজুর

খেজুরে রয়েছে উচ্চ মাত্রার প্রাকৃতিক চিনি বা গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুকরোজ। যা থেকে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ শারীরিক শক্তি। সারাদিন রোজা শেষে শরীর স্বাভাবিক নিয়মে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, কাজ করার এনার্জি পাওয়া যায় না। তাই প্রতিদিনের ইফতারে খেজুর গ্রহণে এই ক্লান্তিভাব অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। এছাড়া খেজুরের মিষ্টি স্বাদের জন্য ক্ষতিকর চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুরের পেস্ট গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

পুষ্টির সম্ভার

শুকনো এই ফলটিতে অন্যান্য যে কোনো ফ্রেশ ও সুস্বাদু ফলের চাইতে পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক বেশি। এতে কার্বের পাশাপাশি রয়েছে প্রোটিনও। এছাড়া বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ও উপকারী ভিটামিনসহ আঁশের উপস্থিতি খেজুরকে অনবদ্য করে তোলে। এক একটি খেজুর থেকে আরও পাওয়া যাবে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যানগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন বি৬।

খেজুরে রয়েছে রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট

অসংখ্য পুষ্টিগুণের সঙ্গে সঙ্গে খেজুর থেকে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণ পাওয়া যাবে। যা খুব কার্যকরভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দৃঢ়তা প্রদান করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের কোষকে ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে, যা থেকে ক্ষতিকর রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। খেজুর থেকে মূলত তিনটি প্রধান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যাবে- ফ্ল্যাভনয়েডস, ক্যারটেনয়েডস ও ফেনলিক অ্যাসিড।

সুস্থ রাখবে আপনার মস্তিস্ক

রোজা রাখার দরুন সারাদিনে খাবার ও পানি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে করে শরীরের মত মস্তিষ্কও দুর্বল ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। খেজুর সে ক্ষেত্রে দারুণ উপকারী একটি ফল। মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খেজুর গ্রহণে পাওয়া যাবে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা একই সঙ্গে মস্তিষ্কের প্রদাহ ও ক্লান্তিকে কমিয়ে আনতে কাজ করবে। এছাড়া গবেষণা থেকে দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর গ্রহণে আলঝেইমারের মতো নিউরোডিজেনেরেটিভ রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

হাড়ের জন্য উপকারী ফল খেজুর

প্রথমেই বলা হয়েছে যে, সহজলভ্য ও পরিচিত অন্যান্য যে কোনো ফলের চাইতে খেজুর অধিক উপকারী ফল। অন্যান্য সকল উপকারিতার মাঝে হাড়ের সুস্বাস্থ্যে অবদান রাখাও খেজুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা। এতে থাকা ফসফরাস,পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের জন্য খুবই উপকারী পুষ্টি উপাদান। রমজানে অনেকেরই পুষ্টির অভাবজনিত কারণে হাড়ে ব্যথাভাবের উপসর্গ দেখা দেয়। তাই প্রতিদিনের ইফতারে ২ থেকে ৩টি খেজুর খাওয়া হলে এই সমস্যাটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।

পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে কাজ করে

শরীর ও পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য উপাদান থেকে পাওয়া আঁশ খুবই জরুরি। মাত্র ২ থেকে ৩টি খেজুর থেকেই পাওয়া যাবে ৭ গ্রাম পরিমাণ আঁশ, যা প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে থাকা ভীষণ উপকারী ভূমিকা পালন করে। বিশেষত রোজা থাকাকালীন সময়ে। স্বাভাবিকভাবেই এই সময়ে খাদ্যাভ্যাসে বড়সড় পরিবর্তন আসে, যা থেকে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা।

তাই ইফতারে নিয়মিত খেজুর খাওয়া হলে সমস্যাটি থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ