দেশে ৫০০ চিকিৎসকসহ ৫০৫ স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪২০ পুলিশ করোনায় আক্রান্ত

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ প্রতিদিনই দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক ডাক্তার। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন বেশি কয়েকজন চিকিৎসক।

গত কয়েকদিনের প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২১ এপ্রিল যেখানে আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ২০০, সবশেষ ২৭ এপ্রিল সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৭৩ জনে। আক্রান্ত চিকিৎসকদের মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছেন ২৮৩ জন। পরের অবস্থানে আছে ময়মনসিংহ। আর বর্তমানে মোট আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা পাঁচশ`র বেশি।

সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের মহাসচিব সাব্বির মাহমুদ তিহান বলেন, দেশে মোট ৩১১ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে পাঁচজন সন্তানসম্ভবাও রয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫০ জন। বাকিরা বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৫০ জন।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ও সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত ৩৯২ জন চিকিৎসক, ৩১১ জন নার্স ও ২৯৮ জন অন্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ১ হাজার ১ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে, করোনা মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ৪২০ পুলিশ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন।

পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১১ এপ্রিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। কোনো পুলিশ সদস্যের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এরপর ২১ এপ্রিল সরকারি এই বাহিনীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ জনে পৌঁছায়। তবে এরপর সংক্রমণের গতি আরও বেড়ে যায়। ২৩ এপ্রিল এই সংখ্যা ছিল দুই শতাধিক। ২৬ এপ্রিল ৩৯৩ জন ও ২৯ এপ্রিলের হিসাবে এই সংখ্যা ছিল ৪২০ জন। আর এই ৪২০ জনের প্রায় ৬০ ভাগ, ২৪০ জনই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য।

এদের বাইরেও আরও এক হাজার ২৬ জন পুলিশ সদস্য কোয়ারেনটাইনে আছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হওয়ায় আগামীতে পুলিশ সদস্যদের আরও বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পিপিই, মাস্ক ও হ্য্যন্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট সরবরাহ করা হয়েছে। পালা করে ডিউটি করানোসহ নেওয়া হয়েছে নানা কৌশল। আর আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য হাসপাতালও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে এসব হাসপাতালে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসাও দেওয়া হচ্ছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘করোনায় চলমান এই সময়ে যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ পিছুপা হবে না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের সুরক্ষিত রেখে দায়িত্ব পালন করবেন।’

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠ পর্যায়ের পুলিশ ও র‌্যাবকে কঠোর হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আইজিপি। এই দুর্যোগের সময় কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

পার্সটুডে

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ