পঙ্গপাল হানা দিয়েছে ২৩ দেশে, বিশ্বের ২০ শতাংশ কৃষিজমি ধ্বংসের আশংকা

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ করোনাভাইরাসের পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বে আতঙ্কের আরেকটি কারণ হয়ে উঠেছে পঙ্গপাল। সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মরুর পঙ্গপাল যারা এ বসন্তে পূর্ব আফ্রিকা, ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইরানে হানা দিয়েছে, তারা আফ্রো-এশীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের মধ্যএপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে তানজানিয়া পর্যণ্ত ২৩ দেশে হানা দিয়ে ফসল নষ্ট করেছে পঙ্গপাল। এর মধ্যে ৯ দেশ পূর্ব আফ্রিকার, ১১ দেশ উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের এবং ৩ দেশ দক্ষিণ এশিয়ার।

এরা খুব দ্রুত চলাফেরা করতে পারে। প্রতিদিন ৯০ মাইল যেতে পারে। চলতি পথে বংশবিস্তার করে পঙ্গপাল। যদি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তবে মরুর এ দলটি আগামী জুনের মধ্যে ৪০০ গুণ বড় হবে। বিশ্বের ২০ শতাংশ কৃষিজমি ধ্বংস করে দিতে পারে।

ইথিওপিয়া সরকারের এক হিসাবে বলা হয়, সম্প্রতি দেশটিতে পঙ্গপাল হানা দিয়ে ৩ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন শস্য নষ্ট করেছে, ২ লাখ হেক্টর কৃষিজমি নষ্ট করেছে। এর ফলে দেশটির ১০ লাখেরও বেশি লোকের খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন।

জাতিসংঘ বলছে, বছর দুয়েক আগে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলের আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে পঙ্গপালের তিনটি প্রজন্মের বংশবৃদ্ধি নজরদারির মধ্যে রাখা সম্ভব হয়নি। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ইয়েমেন, সৌদি আরব ও ইরানে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল যায়। সেখান থেকে বংশবৃদ্ধি করে পূর্ব আফ্রিকার দিকে যায় তারা।

গত বছরের শেষদিকে এরিত্রিয়া, জিবুতি ও কেনিয়ায় দেখা যায় এই পতঙ্গ। বর্তমানে ওই অঞ্চলে আবারও দেখা দিয়েছে। মিশর, সুদান, সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পঙ্গপালের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।

একটি প্রাপ্তবয়স্ক পঙ্গপাল নিজের ওজনের সমান (২ গ্রাম) শস্য একদিনে খেয়ে শেষ করতে পারে। এক বর্গ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী পঙ্গপাল যে পরিমাণ ফসল নষ্ট করে, তা দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে এক বছর খাওয়ানো যায় বলে জানায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা।এক ঝাঁক পঙ্গপাল শত শত টন শস্য একদিনে খেয়ে শেষ করতে পারে।শস্য ছাড়াও বহুভোজী এই পোকা অন্যান্য সবজি ও ফলেরও ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে।

সম্প্রতি ভারতের হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হর্ন অব আফ্রিকা থেকে একদল পঙ্গপাল গতিপথে মরু অঞ্চলের আরেকদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হানা দিচ্ছে। এদের একটি ঝাঁক ইয়েমেন, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, ইরান, সৌদি আরব এবং পাকিস্তান হয়ে ভারতে হানা দিয়েছে।

এরা ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ আরো কয়েকটি এলাকায় ঢুকে ফসল নষ্ট করেছে। অন্যদলটি ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে সরাসরি ভারত উপদ্বীপের কৃষিজমিতে নেমে পড়বে। এরপর যেতে পারে বাংলাদেশের দিকে। উভয় ঝাঁকের সম্মিলিত হামলায় ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা সংকটে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির নীতি নির্ধারকরা।

সূত্র: বিশ্বব্যাংক, এফএও, দ্যা হিন্দু

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১