আম্পানের তাণ্ডবে অন্ধকারে দেড় কোটি বিদ্যুৎ গ্রাহক

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় দেড় কোটির বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব নিয়োজিত সংস্থাটির দেড় কোটি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

এছাড়া খুলনাসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব নিয়োজিত ওয়েস্ট জোন পাওয়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ১২ লাখ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে কিছু উপজেলায় লাইন ঠিক করা হলেও ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকারে রয়েছে। এসব স্থানে বিকল্প সোর্স থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া অন্যতম। এখানকার পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির একটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না। এটি ওজোপাডিকোর অধীনে।

ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী (রুহুল আমিন) বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে ২১ জেলা এবং ২২ উপজেলায় ওজোপাডিকো কাজ করে। আমাদের বিতরণ অঞ্চলের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ১১ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করা সম্ভব হয়েছে। এখনো কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে।

জানা গেছে, ট্রান্সফরমারজনিত সমস্যা ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যুৎ লাইন এরই মধ্যে সচল করা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাতেও কাজ করবে সংস্থাগুলোর কর্মীরা।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রাকৃৃতিক দুর্যোগের ওপর আমাদের কারোরই হাত নেই। তবে দুর্যোগ পরবর্তী দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব সংযোগ স্থাপন করে বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এগুলোও ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান ও সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান। আম্ফানের কারণে এ বোর্ডের অধীনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৫ হাজার পয়েন্টে বিদ্যূৎ লাইন ছিঁড়ে গেছে, প্রায় ২০ হাজার মিটার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ১৭শ মতো খুটি ভেঙেছে, ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে ৮শ। এতে সরকারের ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার শুধু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক হিসাবে ধরা হচ্ছে।

বোর্ডের পরিচালক (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অপারেশন) মুকুল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দেড় কোটির বেশি লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার তথ্য জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ কমার পর থেকে সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। কিছুস্থানে গাছপালা ভেঙে পরিস্থিতি খুবই প্রতিকূল। তবুও বিকেল নাগাদ এক কোটির কাছাকাছি লাইন সচল করা গেছে। আশা করছি আজকের মধ্যেই বাকীগুলো সচল করা যাবে।

সংস্থাটির জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল এবং সন্দ্বীপ এলাকায় বিকেল নাগাদ ৯০ ভাগ সচল হয়েছে। রাতের মধ্যে শতভাগ এলাকায় বিতরণ স্বাভাবিক হয়ে যাবে আশা করছি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার এক ভিডিও কনফারেন্সে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুতায়নের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ জন্য প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১