হংকংয়ে বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, গ্রেফতার ৩০০

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ হংকংয়ে আবার শুরু হওয়া চীন বিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ চোখে-মুখে জ্বালা সৃষ্টিকারী গোলমরিচ গুঁড়ার পেলেট নিক্ষেপ করেছে এবং প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

চীনের জাতীয় সংগীতের অবমাননা সংক্রান্ত একটি বিলের বিরোধিতায় এবং বেইজিংয়ের প্রস্তাবিত বিতর্কিত এক আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলার সময় হংকংয়ের পুলিশ এসব পদক্ষেপ নেয়।

পুলিশ বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই বিনা অনুমতিতে সমাবেশ করছিল।

বিক্ষোভকারীরা চীনের জাতীয় সংগীতের অবমাননাকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করে আনা বিলের বিরোধিতা করছে। তারা আরও মনে করছে প্রস্তাবিত নতুন নিরাপত্তা আইন হংকংয়ের মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে।

বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় এলাকায় আইন পরিষদ ভবনের বাইরে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল প্রাথমিকভাবে। কিন্তু দাঙ্গা পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং এলাকায় পানি ভর্তি প্রতিবন্ধকতা তুলে দিয়ে এলাকাটি অবরুদ্ধ করে দেয়। ফলে বিক্ষোভকারীরা সেখানে বড়ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশে জড়ো হতে পারেনি। সে সময় ভেতরে এমপিরা জাতীয় সঙ্গংগত বিলটি নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনা বিতর্ক করছিলেন।

বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশ ফেসবুকে এক পোস্টে জানায় ১৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ পরে আরও জানায় যে অন্য দুটি এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্য আরও ১১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

পেট্রল বোমাসহ অস্ত্র বহন করার সন্দেহে আরও মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষোভ হয়।

শহরের কেন্দ্রে একজন বিক্ষোভকারী সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রকে জানায়, ‘আমরা আমাদের বাকস্বাধীনতা রক্ষা করতে চাই। এটা আর হংকং থাকবে না, এটা আরেকটা চীনা শহরে পরিণত হতে চলেছে।’

আরেকজন বিক্ষোভকারী রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘মনে আমাদের ভয় আছে, কিন্তু কথা তো বলতেই হবে।’

কী আছে জাতীয় সংগীত বিলে
এই বিলটি আইনে পরিণত হলে, কেউ যদি চীনের জাতীয় সংগীতের অবমাননা করে, বা এর অপব্যবহার করে, তার জরিমানা হবে ৫০ হাজার হংকং ডলার (প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মার্কিন ডলার) এবং তার তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

বুধবার দ্বিতীয় দফা আলোচনার পর বিলটি যদি পাশ হয়, তাহলে এটি তৃতীয় দফা আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে এবং আগামী মাসের গোড়ায় এটির ওপর ভোটাভুটি হবে।

হংকংয়ের নিজস্ব কোন জাতীয় সঙ্গীত নেই। কাজেই ফুটবল ম্যাচ জাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেখানে চীনের জাতীয় সংগীতই ব্যবহার করা হয়।

নতুন নিরাপত্তা আইনে কী আছে?
চীনের প্রস্তাবিত নতুন এই আইনে দেশদ্রোহিতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, নাশকতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং চীন বলছে হংকং ক্রমশ বেড়ে ওঠা অসন্তোষ ও সহিংসতা মোকাবেলায় এই আইনের প্রয়োজন আছে।

সমালোচকরা বলছেন হংকংয়ের সংক্ষিপ্ত সংবিধানে দেশটিকে যে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এই আইন তা খর্ব করবে। ১৯৯৭ সালে হংকং যখন চীনের শাসনে ফিরিয়ে দেয়া হয় তখন এই সংক্ষিপ্ত সংবিধান রচনা করা হয়েছিল।

হংকংয়ের নেতা ক্যারি ল্যাম বলেছেন এই আইন হংকংয়ের নাগরিকের স্বাধীনতার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না।

বিশ্বের প্রায় ২০০ শীর্ষ রাজনীতিক এই নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করেছেন।
খবর বিবিসি

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১