সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজায় যে ফজিলত পাওয়া যাবে

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বছরে মানুষের জন্য দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনকে ফরজ করেছেন। যা পবিত্র রমজান মাসব্যাপী মুসলিম উম্মাহ পালন করে থাকেন।
রমজানরে ফরজ রোজা ছাড়াও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা রেখেছেন এবং তাঁর উম্মতকে রোজা রাখতে বলেছেন। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন দুটি এমন, যে দিন দুটিতে বান্দার আমলসমূহ মহান আল্লাহর সামনে হাজির করা হয়। আর আমি রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমল আল্লাহর সামনে পেশ করা হোক- এটাই আমি পছন্দ করি। (মুসলিম)।

এ দুদিনে রোজা রাখার ৭টি ফজিলত উল্লেখ করা হলো-  (১) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। হাদিসে কুদসিতে মহান রাব্বুল আলামিন বলেছেন, রোজা আমার এবং আমিই এর প্রতিদান দেব। (২) রাসূল (সা.) এর অনুসরণ। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) সোমবার এবং বৃহস্পতিবারের রোজার অপেক্ষা করতেন। (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, নাসাঈ)। (৩) আল্লাহ তায়ালা বান্দা থেকে জাহান্নামকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামকে তার থেকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: খণ্ড-৬, হাদিস নম্বর: ২৫৬৫)। (৪) আল্লাহ তায়ালা বান্দা এবং জাহান্নামের মাঝে আসমান ও জমিনের দূরত্ব সমান খন্দক তৈরি করে রাখেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের মাঝে আসমান ও জমিনের দূরত্ব সমপরিমাণ খন্দক তৈরি করে দেবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: খণ্ড-২, হাদিস নম্বর: ৫৬৩)।

(৫) রোজা কেয়ামতের দিন বান্দার মুক্তির জন্য সুপারিশ করবে। রাসূল (সা.) বলেছেন, রোজা এবং কোরআন কেয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা আল্লাহ তায়ালাকে বলবে, হে আমার রব! আমি তাকে আহার এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত রেখেছিলাম সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল কর। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে রেখেছিলাম, এজন্য তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল কর। রাসূল (সা.) বলেন, তখন উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে। (আহমদ: খণ্ড-২, হাদিস নম্বর: ১৭৪)। (৬) কেয়ামতের দিন বাবুর রাইয়ান দিয়ে প্রবেশের সুযোগ লাভ করবে। রাসূল (সা.) বলেন, নিশ্চয় জান্নাতের রাইয়ান নামের একটি দরজা আছে, কেয়ামতের দিন সেখান দিয়ে রোজাদারা প্রবেশ করবে। (বুখারি: হাদিস নম্বর: ১৮৯৬, মুসলিম: হাদদি নম্বর: ১১৫২)। (৭) রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল করার সম্ভাবনা এবং জান্নাত লাভ। রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, যে রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ আল জামে: হাদিস নম্বর: ৬২২৪)। রোজা যেহেতু আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। তাই ফরজ রোজা ছাড়াও প্রিয়নবী (সা.) ঘোষিত বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা পালন করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে এগিয়ে আসা জরুরি।

আর সোম ও বৃহস্পতিবার যেহেতু বান্দার আমল আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়; তাই সপ্তাহে এ দুইদিন প্রিয়নবীর (সা.) অনুসরণে রোজা পালণেও আল্লাহর কাছে সুন্দর বিনিময় পাওয়া সম্ভব। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে প্রতি সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ