বগুড়ায় বন্যায় ভাসছে চরের লক্ষাধীক মানুষ

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ পানিতে ভাসছে বগুড়ার ৩ উপজেলার চরান্চলের প্রায় সোয়া লাখ মানুষ। পায়ের নীচে বন্যার পানি ও মাথায় বৃষ্টি নিয়ে এসব মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, কিছু দিন আগের বয়ে যাওয়া বন্যার দ্বিগুন বন্যা এখন। ওই বন্যায় সর্বোচ্চ পানি বৃদ্ধ ছিল বিপদসীমার ৬৭ সেঃমিঃ উপরে আর বুধবার বিকেল ৪টায় পানি বিপদসীমার ১১৭ সেঃমিঃ উপরে। পানি বাড়ছেই। বিগত বন্যা এক সপ্তাহ স্হায়ী ছিল আর এবারের বন্যার স্হায়ীত্ব আরো বেশী।

বগুড়া ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার ১৫০ টি গ্রামের ১ লাখ ২২হাজার ৩২০ জন মানুষ পানি বন্দি। ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৮৩১ হেক্টর জমির। ত্রান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ শ মেঃ টন চাল এবং ৩ লাখ টাকা। শিশু ও গবাদী পশুর খাবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আরও ৪ লাখ টাকা।

খোজ নিয়ে দেখা গেছে সারিয়াকান্দি উপজেলার টেংরাকুড়া জামথল, কুড়িপাড়া, আওলাকান্দি, ধনটের বৈশাখী চরের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র, বিদ্যালয়ের উচু জায়গায় গরু, ছাগল, হাস মুরগী এবং প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্র নিয়ে ঠাঁই নিয়েছে। গবাদি পশুর সাথেই এক সাথে কাটছে সময়। সেখানেই রান্না খাওয়া এক জায়গায় চলছে। কেউ কেউ চরের ভাঙন এবং উচু স্হানে জায়গা না পেয়ে জিনিষ পত্র নিয়ে চলে গেছে যমুনার পশ্চিম পাড়ের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধে। চারদিকে পানি, বৃষ্টিতে চরান্চলের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। সাপের উৎপাতে রাতে ঘুমাতে পারে না তারা এমনি ভাবেই কাটছে বগুড়ার চরান্চলের মানুষদের জীবন।
পেটে ক্ষুধা এবং গবাদী পশুর খাবার সংকোটে দিশে হারা হয়ে পড়েছে তারা। প্রতিদিনই ধাপে ধাপে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকে রয়েছে চরবাসীরা।
কুড়িপাড়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উচুু মাঠে কথা হলো জাহাংগীর আলী কাশেম ও মগোর আলীর সাথে। তারা জানালেন, ঘড়ে পানি উঠেছে তাই গরু ছাগল হাস মুরগী নিয়ে ঠাই নিয়েছে স্কুল মাঠে। সেখানেই পশুর সাথে পলিথিনের চাউনী করে বাস করছে। টেংড়া কুড়া চরের সামাদ জানালো, খাবার নেই পেটে, গরু ছাগলেরও একই অবস্হা। তাই চিনতাই আছি কি করবো। পাকের দহ চরের জব্বার জানান, বাজার করতে নৌকা নিয়ে অনেক দুর সারিয়াকান্দিতে যেতে হয়। নৌকা ভাড়া কোথায়, কষ্টে আছি খুবই। তিনি আরও জানালো, চৌকি থেকে নামলেই পানি, ঘড়টাও ভালো না বৃষ্ট হলেই পানি পড়ে। এর উপর আবার সাপের উপদ্রুপ। রাত জেগে থাকি, ঘুম আসে না।
ধুনটের বৈশাখী চরের মুন্নাফ আলী জানান, চর ভাংতে শুরু করার বৈশাখী থেকে পশ্চিম পড়ে হাওড়া খালীতে চলে এসেছি। ওই চরের শরিফুল, জসীম, রাংগা জানান, চর ভাংতে ভাংতে এখন অর্ধেক হয়ে গেছে। আর বোধ হয় চর টিকবে না।
বৈশাখী চরের সাহেব আলী, ভুলু জানান, ঘড়ে পানি উঠায় পশ্চিম পাড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধে চলে এসেছি। দিন কাটছে কোন ভাবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ