সারিয়াকান্দির ইউএনওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ  বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তার অপসারণ ও শাস্তি দাবি করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

সম্প্রতি অভিযোগের অনুলিপি সচিব, এনএসআই, দুদক, বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানদের অনৈতিক দাবিতে সহযোগিতা না করায় তারা মিথ্যাচার করছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া যোগদান করার পর থেকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সাথে জড়িত। বগুড়া-১ আসনের সদ্যপ্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান তার অনিয়ম ও ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের ব্যাপারে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও বগুড়া জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন।

তিনি জানান, গত ১৮ জানুয়ারি আবদুল মান্নানের মৃত্যুর পর ইউএনও আরো বেপরোয়া ও স্বেচ্ছাচারী হয়েছেন। করোনা মহামারী শুরুর পর গত চার মাসে উপজেলা পরিষদের কোনো সভা হয়নি। পরিষদের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ইউএনও এডিপি ও রাজস্ব খাতের টাকা নামে বেনামে পিআইসি ও কোটেশন আহ্বান করে নিজের লোকদের দিয়ে ঠিকাদারির নামে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে কাজ করেছেন। এভাবে কর্ণিবাড়ি ইউনিয়নের আকন্দপাড়ায় গুচ্ছগ্রাম ও কাজলা ইউনিয়নের পাকেরদহ গুচ্ছগ্রামের কাজ করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে সারিয়াকান্দিতে যমুনা ও বাঙালি নদীর তীর রক্ষায় কাজ করছে। সেখানে ইউএনওর যোগসাজশে স্থানীয় বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে নদীতীর রক্ষার কাজ ঝুঁকিপূর্ণ করছেন। তিনি জনপ্রতিনিধি ও সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এর প্রতিবাদ করলেই মোবাইল কোর্ট ব্যবহার ও বরখাস্তের ভয় দেখান। এভাবে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

চন্দনবাইশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন দুলাল অভিযোগ করেন, ইউএনও উৎকোচ ছাড়া ফাইল ছাড়েন না, এলজিএসপি প্রকল্পে ঘুষ নেন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় না করে নিজ সিদ্ধান্তে কাজ করেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সাথে ব্যবসা ও অর্থ নেন। এছাড়াও তিনি অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। তাই তাকে অপসারণ ও সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে বিচার চেয়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

তিনি বলেন, অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সভা ডেকে তাকে অপসারণের দাবিতে কর্মসূচি দেয়া হবে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের অনেক চেয়ারম্যান ও তাদের পরিবারের সদস্যরা গাছ কর্তন, পরীক্ষা চলাকালে প্রাইভেট পড়ানোসহ নানা অপকর্মে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেন, সঠিক তদন্ত হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণ হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ