গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়া গাবতলীতে মায়ের বয়সী মহিলাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টায় জড়িত এক স্কুল ছাত্রের বিচার দাবি করায় ওই শিক্ষার্থীর বাবার কনুইয়ের আঘাতে অমৃত চন্দ্র রায় (৩২) নামে সেই মহিলার দেবর নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল পৌণে ৮টার দিকে জেলার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের সুখানপুকুর এলাকার পাড়কাকড়া ভাঙ্গিরপাড়া (হিন্দুপাড়া) গ্রামে ওই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। নিহত অমৃত ওই একই গ্রামের অনিল চন্দ্রের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মুরগির খামারে কাজ করতেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
বগুড়ার গাবতলী থানার ওসি (অপরেশন) লাল মিয়া জানান, পারকাকড়া গ্রামের সজনৈক এনামুল প্রামাণিকের ছেলে স্কুল ছাত্র রিফাতকে নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। তিনি বলেন, গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর এম আর এম উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রিফাত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ অমৃত চন্দ্রের ভাইয়ের বাড়িতে ঢোকে। এরপর রিফাত অমৃতের ভাবিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তখন ওই মহিলা চিৎকার দিলে লোকজন ছুটে আসে এবং রিফাতকে একটি ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে প্রায় আধা ঘন্টা পর রিফাতের বাবা এনামুল প্রামাণিক সেখানে যায় এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় অমৃত চন্দ্র রায় তাতে বাধা দেন এবং বলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ঘটনার বিচার না করা পর্যন্ত রিফাতকে ছাড়া হবে না। তখন রিফাতের বাবা এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে অমৃত চন্দ্র রায়ের গলা পেঁচিয়ে ধরে কনুই দিয়ে তার বুকে সজোরে আঘাত করেন। এতে অমৃত চন্দ্র রায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
গাবতলী থানার ওসি (অপারেশন) লাল মিয়া জানান, রিফাততার মার বয়সী মহিলাকে কেন জড়িয়ে ধরতে গেল তার সুস্পষ্ট কোন কারণ জানা যায়নি। তবে তিনি বলেন, ওই মহিলা জানিয়েছেন রিফাত প্রায়ই প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় তাকে লক্ষ্য করে নানা অঙ্গভঙ্গি করতো। তবে ছেলের বয়সী হওয়ায় রিফাতের এসব আচরণে তিনি কিছু মনে করতেন না।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গাবতলী সার্কেল) সাবিনা ইয়াসমীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।