ধুনট প্রতিনিধিঃ বগুড়ার ধুনটে ভ্রাম্যমান আদালতে জব্দকৃত বালু মহালের নিলাম ডাকে অংশ নেয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ্ স্বপনকে মারধরের ঘটনায় রাজিবুজ্জামান রাজিব নামে সেই কথিত যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রাজিবুজ্জামান ধুনট সদরপাড়া এলাকার মৃত আমিনুল হকের ছেলে। এদিকে ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগ এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় বুধবার (১২ আগষ্ট) ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্তের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস ও ১০ লাখ টাকা মূল্যের বালু জব্দ করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে এই বালু নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়।
এদিকে কমমূল্যে বালু মহাল নিলামে ডেকে নিতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমঝোতার বৈঠক বসেন। কিন্তু ওই বৈঠকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ছালেহ স্বপনকে হঠাৎ করে চড় থাপ্পর ও মারধর করে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক খায়রুল ইসলাম জুয়েল ও রাজিব সহ তাদের লোকজন। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তোজনা শুরু হলে তাৎক্ষনিক উপজেলা পরিষদ চত্বর ও বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা আবু সালেহ্ স্বপন বাদী হয়ে ধুনট উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক খায়রুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম রনি, ধুনট পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজন সাহা ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য রাজিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে রাতেই ধুনট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে যুবলীগ নেতা রাজিবুজ্জামানকে আটক করেছে। রাজিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ধুনট থানায় বিস্ফোরক, মারামারি, হত্যার চেষ্টা ও অগ্নিকান্ড সহ ৬টি মামলা রয়েছে।
এদিকে ধুনট ছাত্রলীগ নেতা আবু সালেহ স্বপনের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, ধুনট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলা রিপন, ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া খন্দকার, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন রিপন, বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ প্রমূখ।
প্রতিবাদ সভায় ধুনট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান বলেন, ধুনট পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অনুপ্রবেশ করে যুবলীগের নাম ভাঙ্গিনে একের পর এক সন্ত্রাসী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন রাজিবুজ্জামান রাজিব। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে থানায় মারধরের অভিযোগ দেওয়ার প্রতিবাদে উপজেলা যুবলীগের সধারণ সম্পাদক বনি আমিন মিন্টুর নেতৃত্বে আরেকটি পাল্টা প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আলিম আল রাজি বুলেট, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম রনি প্রমূখ।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, রাজিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২০ সালের একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে বগুড়ার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে মারধরের ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।