নাটোরে স্ত্রীকে ফিরে পেতে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা!

নাটোর প্রতিনিধি: স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকা অবস্থায় দরীদ্র বাবা-মার ওপর প্রভাব খাটিয়ে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীকে বিয়ে, এরপর নির্যাতন। এক পর্যায়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে বাবার বাড়িতে রেখে আসার কিছুদিন পর স্ত্রীর ডিভোর্স লেটার। এখন ওই স্ত্রীকে ফিরে পেতে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও ডিভোর্স স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৪ লাখ ৬০ হাজাার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণ পাওয়ার দাবীতে মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

বুধবার দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলার পিঁপরুল ইউনিয়ন পরিষদে মামলার শুনানী হয়। ইউপি চেয়ারম্যান কলিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার মামলার অভিযোগকে মিথ্যা দাবী করে এ থেকে প্রতিকার পেতে আইনের স্মরণাপন্ন হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

পিঁপরুল ইউনিয়নের বাঁশভাগ টুলটুলিপাড়া গ্রামের কৃষক ভুক্তভোগী আব্দুর রউফ ও তার মেয়ে বৃষ্টি জানান, বৃষ্টি খাতুন তেলকুপি উচ্চবিদ্যালয়ে ৯ ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ওই স্কুলের এসএমসি সভাপতি জালাল উদ্দীনের দৃষ্টিতে পরে। সে ওই এলাকার ক্যাডার হওয়ায় কেউ তার সামনে কথা বলার সাহস পেত না। বৃষ্টিকে স্কুল ও রাস্তায় প্রেমের প্রস্তাব দিত ওই জালাল। এমনকি তার বাড়িতে গিয়ে তাদেরকেও বিভিন্নভাবে ভয়ভিতি দেখাতো যাতে বৃষ্টির সাথে তাকে বিয়ে দেয়া হয়।

রউফের দাবী, এক পর্যায়ে মেয়ের অমতেই তারা জালালের সাথে বৃষ্টিকে বিয়ে দিতে বাধ্য হন। বিষয়টি জানাজানি হলে জালাল সভাপতির পদ থেকে অপসারণ হয়। এদিকে প্রায়ই জালাল নেশা করে বাড়ি ফিরে মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাতো আর বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে তাকে দিতে বলতো। গত এসএসসি পরীক্ষার প্রায় তিনমাস আগে তার মেয়েকে পরীক্ষা দিতে তার বাড়িতে নিজে রেখে আসে জালাল। এরপর তার বাড়িতে প্রায়ই গিয়ে জালাল মেয়েকে নির্যাতন চালাতো। এক পর্যায়ে গত কোরবাণী ঈদের আগে মেয়ে তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠায়।
এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ আগষ্ট ইউপি পরিষদে জালাল তার মেয়ে, স্ত্রী ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। এতে জালাল অভিযোগ করে তার কাছে ধার দেয়া বাবদ জালাল পাবে ২ লাখ টাকা, বৃষ্টি যাওয়ার সময় নিয়ে গেছে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণ।

বৃষ্টিকে ফিরিয়ে নিতেই জালাল এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছে দাবী করে ভুক্তভোগী রউফ জানান, মেয়েকে জোর করে পাঠালে তার জীবন নাশের কারণ হতে পারে বিধায় তারা এমন কাজ করতে পারবেননা।

এব্যাপারে তিনি আইনের আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জালাল জানান,তিনি ওই টাকাগুলো পাবেন তাই অভিযোগ দিয়েছেন।

তবে এব্যাপারে বৃষ্টির দাবী অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হতেও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন দাবী করে তার ও দরীদ্র বাবা-মার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে তিনি সরকার ও প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান কলিম উদ্দীন জানান, দাবী করা ওই টাকার ব্যাপারে শালিসের এখতিয়ার তাদের নেই বিধায় উভয়পক্ষকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০