বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বগুড়ায় বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক তাড়াতে শিক্ষার্থীকে ব্যবহার ।যে ছাত্রীর ছবি ব্যবহার করে চক্রটি সুকৌশলে গণমাধ্যমে অভিযোগ সাজিয়েছেন, সেই ছাত্রীই শিক্ষক সম্পর্কে ভালো মতামত তুলে ধরে জড়িদদের শাস্তি চেয়ে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসকের কাছে। স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে শিক্ষার্থীকে ব্যবহার করে আসছেন একশ্রেণীর স্বার্থান্বেসী ও কুচক্রী মহল। এবার কুচক্রী এই গ্রুপের শিকার হতে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির বাংলা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। ষঢ়যন্ত্রমূলক ছাত্রী হয়রানীর মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন তারা। বিষয়টি বুঝতে আরও বেশি সহজ করে তুলেছে অভিযোগকারীর অসংলগ্ন লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজসহ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ঠ করতে কিছুদিন যাবৎ সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র কাজ করছে। এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২০ জানুয়ারী এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে বেকায়দায় ফেলতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় জেলা প্রশাসকের কাছে। যদিও তদন্ত কাজে পরপর দুই দফায় অনুপস্থিত থেকে তদন্ত কমিটিকে অসহযোগিতা করেছেন অভিযোগকারী। এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রায় আড়াই বছর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে এই অভিযোগকারী। নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে চক্রটি দীর্ঘদিন পরে বিদায়ী ঐ ছাত্রীকে ব্যবহার করে সাজানো অভিযোগ দেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি জেলা প্রশাসকের কাছে। অভিযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উপাধ্যক্ষ শাফিকা আক্তারকে জনবহুল ব্যস্ততম সড়কে সন্ধ্যা ৬ টায় ঘটনার একমাত্র স্বাক্ষী উল্লেখ করা হলেও এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে চাননি প্রতিবেদককে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী জাফরিন রহমানও লিখিত অভিযোগ বিষয়ে মন্তব্য না করেই বলছেন তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধেই হবে, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। এতে প্রতীয়মান হয়, অভিযোগটি আদৌ তার নিজস্ব কোন বিষয় ছিলনা, বরং অন্যের প্রভাব ও প্ররোচনায় তা করা হয়েছে।
অথচ ভিন্ন একটি ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে বেসরকারী একটি টিভি চ্যানেল বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী অংকিতা তাবাসসুমের ছবি দেখিয়ে শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায় হতাবাক হয়ে পড়েন শিক্ষক শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকসহ স্বজনরা। বিষয়টির সত্যতা জানতে চাইলে স্থানীয় টিভি সংবাদিক কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তাদের কাছে। পরবর্তীতে ৩ সেপ্টেম্বর বিষয়টি অসত্য মিথ্যা ও ষঢ়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে লিখিত জবাব দেন শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। একই দিনে প্রতারণার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে টিভিতে ছবি দেখানোয় সম্মানহানি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন ঐ শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, ডিজিটাল নিরাপত্ত্বা আইনে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নিজ পরিবারের নিরাপত্ত্বা চেয়ে অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন ঐ শিক্ষার্থী। ভূক্তভোগি শিক্ষার্থীর দাবি, একটি চক্র শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সম্পর্কে যে ধরনের মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হয়েছে, এর উপযুক্ত শাস্তি চাই।
অনুসন্ধানে কথা হয় বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের অভিভাবক সানজিদাসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলছেন, তাদের সন্তান ৩য় শ্রেণী থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে, কোনদিন শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ এর কোনরকম খারাপ কিছু দেখেননি। বরং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ও কালচারাল উপকমিটিসহ বিভিন্ন উপকমিটির আহবায়ক হিসেবেও তিনি ছিলেন একজন সফল মানুষ। একই ধরনের মন্তব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সাবিহা নাজনীনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর। তারা মনে করেন, এ ধরনের অশোভন ও অশালীন বক্তব্য উপস্থাপন করে যারা শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের ক্ষতি করতে চাইছেন তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোস্তিাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কেউ কোন অভিযোগ করেননি, তিনি নিজেও খারাপ কিছু দেখেননি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ।